রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘জীবিত ও মৃত’ গল্পে লিখেছিলেন, ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল, সে মরে নাই।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা তাঁর বিরুদ্ধে আনীত দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে প্রমাণ করলেন তিনি আসলে কোনো দোষ করেননি। আইনের চোখে সম্পূর্ণ নির্দোষ।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত নিউমার্কেট থানার মামলায় খাদিজাকে অব্যাহতি দেন। গত ২৮ জানুয়ারি কলাবাগান থানায় করা মামলায় তিনি অব্যাহতি পেয়েছিলেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য খাদিজাকে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালাতে হয়েছে। বারবার তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ হয়েছে। কোনো অপরাধ না করেও ১৫ মাস তাঁকে জেল খাটতে হয়েছে। তাঁর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে তাঁর ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অন্যটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদী পুলিশ।
২০২২ সালের মে মাসে পুলিশ দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে সে বছরের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ।
এরপর বিচারিক আদালতে দুবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হয়। ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি খাদিজার জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। গত ১৫ নভেম্বর খাদিজার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।