সরকারের নির্বাহী আদেশে এক বছরের মধ্যে আবারও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ল। সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে গড়ে ইউনিটপ্রতি ৭৫ পয়সা আর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে গড়ে ইউনিটপ্রতি ৭০ পয়সা। এতে বাসাবাড়িতে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জন্য ইউনিটপ্রতি ২৮ পয়সা আর সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জন্য ১ টাকা ৩৫ পয়সা বেড়েছে। সেচে ব্যবহৃত বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ইউনিটপ্রতি ৪৩ পয়সা।
এটাই শেষ নয়; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বক্তব্য অনুসারে, আগামী তিন বছরে ধাপে ধাপে এভাবে বিদ্যুতের দাম ‘সমন্বয়’ করা হবে, অর্থাৎ বৃদ্ধি করা হবে। (বিদ্যুতের দাম ধাপে ধাপে বাড়বে, প্রথম আলো, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪)
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত এমন একটি সময়ে নেওয়া হলো, যখন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় এমনিতেই মানুষ ব্যাপক চাপে রয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি মাসে গ্যাসের দাম গড়ে ৮২ শতাংশ এবং বিদ্যুতের দাম জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন দফায় প্রতি মাসে গড়ে ৫ শতাংশ করে বাড়ানোর কারণে তা মূল্যস্ফীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়লে গ্রাহককে একদিকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ কিনতে বাড়তি খরচ করতে হয়, অন্যদিকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে উৎপাদিত সব পণ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সেগুলোর জন্যও বাড়তি মূল্য দিতে হয়।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের দাম বাড়ায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাড়বে, এ কারণে পরবর্তী সময়ে বিদ্যুতের দাম আরও বাড়ানোর চাপ তৈরি হবে। গত বছর বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাসের দাম ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা করায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, যা এ বছর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
আর এ বছর গ্যাসের দাম ১৪ টাকা থেকে ১৪ টাকা ৭৫ পয়সা করায় তা সামনের দিনগুলোয় বিদ্যুতের দামের আরও বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া শিল্পকারখানার ক্যাপটিভ বা নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইউনিটপ্রতি গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা করার কারণে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রনির্ভর শিল্পকারখানার উৎপাদন খরচও বাড়বে।