একাত্তরের ১ মার্চ ইয়াহিয়ার ফাঁদে পা দেননি বঙ্গবন্ধু

আজকের পত্রিকা মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী প্রকাশিত: ০১ মার্চ ২০২৪, ১১:৪১

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে মার্চ মাস অসংখ্য অগ্নিঝরা ঘটনাপ্রবাহে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের ১ তারিখে পাকিস্তানের সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আকস্মিকভাবে এক বেতার ভাষণে তাঁরই পূর্বঘোষিত ৩ মার্চের গণপরিষদ অধিবেশন স্থগিত করেন। অধিবেশন স্থগিত করার কারণ হিসেবে ভাষণে ইয়াহিয়া উল্লেখ করেছিলেন যে, পাকিস্তানের একটি প্রধান দল পিপলস পার্টি ও অন্য কয়েকটি দল ৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদান না করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইয়াহিয়ার ঘোষণা বেতারে প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই গোটা পূর্ববাংলা যেন প্রতিবাদে ফেটে পড়ে।


এমন দৃশ্য কেউ আগে দেখেনি, ভাবতেও পারেনি। রাস্তায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্লোগান দিতে দিতে নেমে আসে। ঢাকা স্টেডিয়ামে বিসিসিপি ও আন্তর্জাতিক একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠানরত ক্রিকেট ম্যাচ ভন্ডুল হয়ে যায়। দর্শক স্টেডিয়াম থেকে বের হয়ে মিছিলে শরিক হন এবং স্লোগানে অংশ নেন।স্লোগান ছিল—‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘পিন্ডি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, ‘ছয় দফা নয় এক দফা, এক দফা, এক দফা’ ইত্যাদি। অধিবেশন স্থগিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকায় বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা বিমানবন্দর এবং পিআইএর মতিঝিল অফিসের কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অফিস ছেড়ে চলে যান।


বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন রুটে ও আন্তদেশীয় রুটে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অধিকাংশ মিছিল স্লোগান দিতে দিতে মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণীর দিকে যেতে থাকে। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। ৩ তারিখের অধিবেশনে ছয় দফাভিত্তিক শাসনতন্ত্র প্রণয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ঠিক সেই সময় ইয়াহিয়ার বেতার ভাষণের কথা ছড়িয়ে পড়লে হোটেল পূর্বাণীতে সাংবাদিক এবং উপস্থিত জনতার উদ্দেশে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার কঠোর প্রতিবাদ জানান। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ঘোষিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তিনি ২ মার্চ ঢাকা শহরে, ৩ মার্চ সারা বাংলায় হরতাল পালন এবং ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভার ঘোষণা দেন। ৭ মার্চের জনসভায় বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ কর্মপন্থা ঘোষণা করবেন বলে জানান।


নানা ঘটনায় বাঙালি পাকিস্তানের প্রতি চরম বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানের প্রতি একসময় যেটুকু বিশ্বাস অবশিষ্ট ছিল, তা-ও তখন পরিত্যাজ্য হয়ে যায়। কারণ পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং এর শাসক অধিকাংশ রাজনীতিক পূর্ব বাংলাকে কতখানি অবজ্ঞা-অবহেলা করছিল, তা মানুষকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী অবিসংবাদিত নেতারূপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। নানা অজুহাত আর তালবাহানা একের পর এক ঘটাতে থাকে পাকিস্তানের সামরিক শাসক এবং পিপলস পার্টির নেতা ভুট্টো ও মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।


৩ মার্চ তারিখে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদান না করার তালবাহানা করেছিলেন পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। ঢাকায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে যোগদান করলে নাকি তাঁদের হত্যা করা হবে এমন হুমকিও ভুট্টোর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us