অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিট্যান্স গার্মেন্টসের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ

বণিক বার্তা ড. মইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ০১ মার্চ ২০২৪, ১১:৩৬

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতার মূল চালিকাশক্তি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাক রফতানি থেকে অর্জিত রফতানি আয়। অর্থনীতির একজন গবেষক হিসেবে আমার দৃঢ় অভিমত, দেশের গত চার দশকের অর্থনৈতিক গতিশীলতার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অভিবাসনকারী বাংলাদেশীরা এবং ফরমাল চ্যানেলে কিংবা হুন্ডি প্রক্রিয়ার মতো অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। গুরুত্বের দিক থেকে গার্মেন্টস দ্বিতীয় স্থানে। আমার এ অনুসিদ্ধান্তকে ভুল বুঝবেন না, প্লিজ! আমি গার্মেন্টস শিল্পের অবদানকে খাটো করার জন্য কথাটি বলছি না, অকাট্য প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিট্যান্সের ক্রমবর্ধমান অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য নিরেট সত্যটা তুলে ধরছি। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে সরকারি সংস্থা ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) জানিয়েছে, বাংলাদেশের ১ কোটি ৫৫ লাখ অভিবাসী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে ও কর্মরত রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ অভিবাসীদের কর্মসংস্থান না হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি যে কতখানি ভয়াবহ বেকারত্ব সমস্যায় বিপর্যস্ত হতো সেটা কল্পনা করতেই ভয় লাগে।


স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বাংলাদেশকে যে ‘আন্তর্জাতিক বাস্কেট কেস’ অভিহিত করা হয়েছিল, তার প্রধান কারণই ছিল ওই সময়ের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যার দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল এবং দেশটি ওই বিপুল জনসংখ্যার কর্মসংস্থান করতে পারবে না বলে উন্নয়ন-চিন্তকরা মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন। ২০২২ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা নির্ধারিত হয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখের মতো। অথচ এখন বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধির হার সত্তর দশকের ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে ১ দশমিক ১২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধির হারের এমন প্রশংসনীয় হ্রাসের পেছনে অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। পাকিস্তান জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার তেমন একটা কমাতে না পারায় পাকিস্তানের জনসংখ্যা এখন ২৩ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। কিছুদিন আগেও মনে করা হতো, প্রতি বছর বাংলাদেশের শ্রমবাজারে ১৮-২০ লাখ শ্রমশক্তি যোগ হচ্ছে। অথচ অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে বছরে সাত-আট লাখের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এখনো সম্ভব হচ্ছে না। এর মানে, বিদেশে কর্মসংস্থান বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘সেফটি বাল্ব’ হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। এটা সত্যিই স্বস্তিদায়ক যে ২০২৩ সালে ১৩ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী অভিবাসন নিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান নিতে সমর্থ হয়েছেন। সমাজে বড় ধরনের অস্থিরতা ও সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কাকে রোধ করে চলেছে বিদেশে অভিবাসন।


কৃষি খাতের পর দেশের শ্রমশক্তির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে বিদেশে অভিবাসন। পাকিস্তান আমলে সিলেট থেকে বিলেতে বেশকিছু সংখ্যক অভিবাসীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হলেও অভিবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিতে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়নি। সত্তর দশকের দুটো আন্তর্জাতিক তেল সংকটের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় যে উন্নয়নযজ্ঞ শুরু হয়েছিল তার ফলে সত্তর দশকের শেষ দিকে এবং বিশেষত আশির দশক থেকে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশীদের ব্যাপক অভিবাসনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এ অভিবাসন-প্রবাহ গত চার দশকে বাড়তে বাড়তে এখন মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় ২০২৪ সালে ৫৫ থেকে ৬০ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মরত রয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে ৮০-৯০ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসী বসবাস করছেন এবং প্রায় সব দেশে তাদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ যে বর্তমানে বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির প্রায় ১৮ শতাংশ বিদেশে কর্মরত রয়েছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us