এ মুহূর্তে বিদ্যুতের মোট বকেয়া ভর্তুকির পরিমাণ ৪৩ হাজার কোটি টাকা। বড় অঙ্কের দায় মেটাতে মার্চেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এতে প্রতি ইউনিটের মূল্য বাড়বে ৩৪-৭০ পয়সা। ভর্তুকির দায় মেটানোর বিকল্প কৌশল হিসাবে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বন্ড ইস্যু করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে। ঋণের অর্থ দিয়ে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধ করা হবে। ইতোমধ্যে ২৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে বন্ড ইস্যু হয়েছে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার। এসব বন্ডের মেয়াদ শেষে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে আসল ও সুদ পরিশোধের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ পরবর্তী ১০ অর্থবছরের বাজেটে (২০২৪-৩৪) বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
বিদ্যুতের ভর্তুকি অর্থনীতিকে বড় ধরনের চাপে ফেলছে। এ ভর্তুকির অঙ্ক বেড়েছে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। এছাড়া রয়েছে মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি। গত দুবছর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ে রেকর্ড হয়েছে। বকেয়ার অঙ্ক বেশি থাকলেও চলতি অর্থবছরে বাজেটে বিদ্যুতে ভর্তুকিতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা এবং আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেটে বরাদ্দ ছিল ২৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। কিন্তু এই ভর্তুকির অর্থও দুবছর ধরে পুরোপুরি ছাড় করতে পারছে না অর্থ বিভাগ। যে কারণে বকেয়ার পরিমাণ বেড়েই চলছে।
মঙ্গলবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, মার্চ থেকেই গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩৪ থেকে ৭০ পয়সা বাড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ পড়ে ১২ টাকা। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ৪ থেকে ৭ টাকা। এখন মার্চের প্রথম সপ্তাহে সমন্বয় করা হবে। জ্বালানির ওপর বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ওঠানামা করে। এর সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। আমরা বিদ্যুতের ভর্তুকি থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছি। এজন্য মূল্য সমন্বয় করা হবে। এর আগে বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তের মধ্যে ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। এজন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ভর্তুকি কমিয়ে আনতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথাও জানানো হয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধিদলকে।