মাদারীপুর সদর উপজেলার একটি গ্রাম হাসানকান্দি। গ্রামটির একটি মোড়ের নাম ‘ইতালি মোড়’। মুখে মুখে এই নামকরণের কারণ, গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ ইতালিপ্রবাসী। মাদারীপুরের আরও কয়েকটি গ্রামে আছে ইতালিপ্রবাসীদের ছড়াছড়ি। তবে এঁদের সিংহভাগই গেছেন ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ পথে।
অবৈধভাবে গেলেও তাঁদের ওপর ভর করে বদলে গেছে অধিকাংশের পারিবারিক অবস্থা। ইতালিপ্রবাসী ও তাঁদের পরিবারের এই ভাগ্যবদল দেশটিতে যেতে আগ্রহী করেছে মাদারীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোর যুবকসহ বিভিন্ন বয়সীদের। এই স্বপ্নকেই পুঁজি করে জেলাগুলোতে গড়ে উঠেছে ভয়ংকর মানব পাচারকারী চক্র। লিবিয়া থেকে শুরু করে জেলার গ্রাম পর্যন্ত এই চক্রের বিস্তার। জনপ্রতিনিধিরাও আছেন এই চক্রে।
মানব পাচারকারী চক্রের ফাঁদে পড়ে অবৈধভাবে ইতালি পাড়ি জমাতে গিয়ে প্রাণও হারাচ্ছেন অনেকে। সর্বশেষ লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় নৌকায় আগুন লেগে নিহত ৯ জনের ৫ জনই মাদারীপুরের। বাকি চারজনের তিনজন গোপালগঞ্জের, অন্যজন পাকিস্তানি। বিভিন্ন সময়ে সাগরে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও অনেক। এ ছাড়া লিবিয়ায় গেম ঘরে (ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার আগে অভিবাসীদের রাখার স্থান) নির্যাতন করে জনপ্রতি কয়েক লাখ টাকা আদায়, টাকা না দিলে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। দালালদের বিরুদ্ধে অনেকে মুখ খুললেও ভয়ে অনেকে নীরবও থাকেন।