টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা ডলার—দুটির সংকটেই ভুগছে বিদ্যুৎ খাত। বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়িয়ে টাকার ঘাটতি মেটাতে যাচ্ছে সরকার। এতে দেশীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া বিল পরিশোধে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। তবে ভারতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল ও জ্বালানি আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের জোগানের অনিশ্চয়তা কাটেনি। এতে গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে উৎপাদন সক্ষমতার কোনো ঘাটতি নেই। তবে ঘাটতি আছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও জ্বালানি তেলের (ডিজেল, ফার্নেস) সরবরাহে। চাহিদামতো জ্বালানি না পাওয়ায় গত দুই বছর গ্রীষ্ম মৌসুমে ব্যাপক লোডশেডিংয়ে ভুগতে হয়েছে ভোক্তাদের। এর মধ্যে গত বছর গ্রীষ্মের আগে টানা তিন দফা দাম বাড়িয়েও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি।
এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। গত বছরের চেয়ে চাহিদা বেড়েছে ১১ শতাংশের মতো। একই সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়েছে একই হারে। তবে গত বছরের মতোই সক্ষমতার বড় একটি অংশ বসিয়ে রাখতে হতে পারে জ্বালানির অভাবে। গড়ে ২৫ শতাংশ সক্ষমতা বসে ছিল সর্বোচ্চ চাহিদার সময়েও। এর বাইরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত বন্ধ থাকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সক্ষমতা। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু থাকুক বা বন্ধ থাকুক, চুক্তি অনুসারে সব কেন্দ্রকে ভাড়া পরিশোধ করতে হয়; যা ক্যাপাসিটি চার্জ নামে পরিচিত। গত অর্থবছরে পিডিবি ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া পরিশোধে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, গত বছর ৪১ শতাংশ সক্ষমতা অলস বসে ছিল।