‘আব্বে কয় কী?’- পুরান ঢাকার অলিগলিতে এখন আর ‘ঢাকাই টানে’ এমন বাক্য শোনা যাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুরান ঢাকায় আবাস গড়া, তাদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ায় ভাষায় বিবর্তন, ‘ঢাকাইদের’ রাজধানীর অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি নানা ঘটনায় ‘ঢাকাই বাংলার’ ব্যবহার কমছে। আরেক কারণ হল, স্কুলে যাওয়ার পর শিশু কিশোরদের মধ্যে ‘প্রমিত বাংলা’র চর্চা।
দূর থেকে মানুষ ভাবে পুরান ঢাকায় বলার ভঙ্গি মানেই বুঝি ‘কুট্টি’। তবে সেখানে আরো একটি গোষ্ঠী, যারা কথা বলে সোব্বাস ভাষায়, নিজেদের বলে সোব্বাসী।
এই সোব্বাস শব্দটি এসেছে সুখবাস থেকে। সোব্বাস ঢাকাইরা 'সুখ'কে বলে 'সোখ'। সুখে বাস করে বলে তাদের সুখবাস বলা হয়। সুখবাস থেকে সোখবাস, আর তা থেকে সোব্বাস।
ফটো সাংবাদিক পাভেল আহমেদের জন্ম, বেড়ে উঠা, সবই পুরান ঢাকায়। সুখবাসী বা সোব্বাসী হলেও তিনি আর সে ভাষা চর্চা করেন না।
গবেষক ও আদি ঢাকাইয়ারা বলছেন, মোঘলরা ঢাকায় আসার সময় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে লোকজন নিয়ে আসেন। তারা তখন স্থানীয়দের সঙ্গে মিশতে উর্দু, ফার্সি, হিন্দি এমন বেশ কিছু ভাষার মিশ্রণে নতুন এক কথার ভঙ্গির প্রচলন হয় যেটি ‘সুখবাস’ হিসেবে পরিচিত। পরে সেই ভাষায় বাংলা ও ইংরেজি শব্দও ঢুকে পড়ে।
পুরান ঢাকায় যে ভাষাভঙ্গি বাইরের সমাজে বেশি পরিচিত, তাকে বলে ‘কুট্টি’। এর উদ্ভব ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে।