আমার পথে আমি চলি, আমি কারও ধার ধারি না। নিজেদের ব্যাপারে এমন করে আমরা ভাবি। অন্তত ভাবতে পছন্দ করি। চোখে-মুখে প্রবল আত্মবিশ্বাস এনে, সিনা টান করে, আঙুল নাচিয়ে বলতে ভালো লাগে—এ আমার জীবন, আমার চলার পথ আমিই ঠিক করব।
তবে আদতে তা হয় না। আমাদের চলার পথ আমরা ঠিক করতে পারি না। নিজের পছন্দের পথে আমরা চলতে পারি না। জন্মের পর থেকেই আমাদের ‘চলার পথ’ ঠিক করে দেওয়ার জন্য ধাপে ধাপে দাঁড়িয়ে থাকেন অন্য কেউ। মা-বাবা, গুরুজন, শিক্ষক কিংবা জীবনসঙ্গী। ফলে মানুষ যে একটা সম্পূর্ণ ‘স্বতন্ত্র একক সত্তা’, তা ব্যক্তিমানুষটি নিজেই ভুলে যান একসময়। ভেতরে রবীন্দ্রনাথ হয়ে ওঠার সত্তা নিয়ে কেউ হয়ে যান উকিল, চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলী। রোদ্দুর হতে চাওয়া অমলকান্তি হয়ে যান ছাপাখানার শ্রমিক। নচিকেতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেউ গাইতেই পারেন—‘আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন।’ তবে সুরে সুরে চিৎকারই সার। আপনার বোকা বোহেমিয়ান, খ্যাপাটে বাউন্ডুলে কিংবা আউলা-বাউল হতে চাওয়ার শখ মিটিয়ে দেবে চারপাশের গূঢ় বাস্তবতা।