মহান আল্লাহর অপার কৃপায় পবিত্র শাবান মাস আমরা অতিবাহিত করছি। আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি, পবিত্র শাবান মাসের ৫ তারিখ। ইসলাম ধর্মে চন্দ্রমাসের মধ্যে শাবান মাস বিশেষ বরকতপূর্ণ। কেননা অন্য মাসের তুলনায় এ মাসের বিশেষ কিছু নফল আমল রয়েছে, যা আমল করলে আমরা জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি এবং জান্নাত লাভের পথ সুগম হবে। এছাড়া মোমেন মুত্তাকিরা বরকতপূর্ণ শাবান মাস থেকেই পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতি নেন। তারা শাবান মাসেই একটি রুটিন তৈরি করে নেয় যে, আগের রমজান থেকে আগত রমজানে কি কি নেক আমল বেশি করবে।
হাদিস পাঠে জানা যায়, শাবান মাস আসার আগেই মহানবি (সা.) দুই হাত তুলে এ দোয়া পাঠ করতেন এবং সাহাবাদেরও পড়তে বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবাও ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা ইলা শাহরির রমাদান’ (মসনদে আহমদ)। অর্থাৎ হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসে বরকত দাও এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দাও।
তাই এ মাসকে বলা হয় মাহে রমজানের আগমনী বার্তা। শাবান মাস মূলত পবিত্র মাহে রমজানের প্রস্তুতির মাস। মহানবি (সা.) শাবান মাসে অন্য মাসের তুলনায় বেশি বেশি নফল রোজা, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও নামাজ আদায় করে মাহে রমজানের পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। উম্মুল মোমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘নবি করিম (সা.) কখনো নফল রোজা রাখতে শুরু করলে আমরা বলাবলি করতাম, তিনি বিরতি দেবেন না।
আর রোজার বিরতি দিলে আমরা বলতাম যে, তিনি মনে হয় এখন আর নফল রোজা রাখবেন না। আমি মহানবিকে (সা.) রমজান ব্যতীত অন্য কোনো মাসে পূর্ণ এক মাস রোজা পালন করতে দেখিনি। কিন্তু শাবান মাসে তিনি বেশি নফল রোজা রেখেছেন’ (মুসলিম)। অপর একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘শাবান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে মহানবি (সা.) এত অধিক হারে নফল রোজা আদায় করতেন না’ (বোখারি)।
স্রষ্টার পরে মাখলুকের মধ্যে বিশ্বনবি (সা.) স্থান প্রথম হওয়ার পরেও তিনি রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে আগ থেকেই রোজা রাখা শুরু করতেন। নবি করিম (সা.) এ মাসে অধিকহারে নফল ইবাদত-বন্দেগিও করতেন। এ সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, মহানবিকে (সা.) জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আপনার কাছে মাহে রমজানের পর কোন মাসের রোজা উত্তম?’ তিনি বললেন, ‘রমজান মাসের সম্মান প্রদর্শনকল্পে শাবানের রোজা উত্তম’ (তিরমিজি)।