ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেধা সম্পদের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন এই লেখক ও গবেষক। বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যে ডিপিডিটির কার্যক্রম এবং আন্তঃসীমান্ত পণ্যগুলোর জটিলতা নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) নিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক (ডিপিডিটি) কাজ করছে। এ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।
ড. মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম: একদম শুরুতেই ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য চিহ্নিত করে আবেদন করা হয় ডিপিডিটিতে। সেই আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে সনদ দেয়ার আইনি ক্ষমতা ডিপিডিটিকে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে তথ্যগুলো সঠিক কিনা ও জিআই পণ্য হওয়ার শর্তগুলো মানছে কিনা সেটি নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটি। শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর জিআইয়ের জন্য আইনানুযায়ী দুইভাবে নিবন্ধন করতে পারবে। প্রথমত জিআই হিসেবে নিবন্ধন, দ্বিতীয়ত জিআই পণ্য ব্যবহারের অধিকার পাওয়ার নিবন্ধন।
জিআইয়ের বেলায় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। জিআই পণ্যগুলো একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে আসবে। সেই পণ্যগুলো যাচাই করে তারা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবে পণ্যগুলোর জিআই হিসেবে স্বীকৃতি দেবে কিনা। যদি দেয়া যায় তাহলে তারা জিআই জার্নালে প্রকাশ করবে। এভাবে প্রচার করার পেছনে কারণ হলো এ নিয়ে কারো কোনো আপত্তি আছে কিনা নিশ্চিত হওয়া। যদি কারো আপত্তি থাকে তাহলে তারা আপিলও করতে পারবে। বাংলাদেশের আইনানুয়ায়ী এখানে আপিল শুনবে সরকার।
ভারত ও বিশ্বের অন্যান্য দেশেও আপিলের বিধান আছে। তবে এর জন্য আলাদাভাবে আপিলেট বোর্ড আছে। এ বোর্ডে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তো থাকবেনই, এর পাশাপাশি থাকবেন বিশেষজ্ঞ। তারা আপিল শুনবেন। উদাহরণ হিসেবে বললে, ভারতে পেটেন্ট অ্যাটর্নি থাকবেন, যারা দরখাস্তগুলো উপস্থাপন করবেন। তবে তাদের আইনে বলা আছে, এ পদের জন্য পেটেন্ট লয়ের ওপর পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষায় পাস করলেই কেবল পেটেন্ট অ্যাটর্নি হতে পারবেন। কিন্তু আমাদের এখানে যে কেউ ডিপিডিটিতে দরখাস্ত উপস্থাপন করতে পারে। একই সঙ্গে যারা আইনজীবী, তারাও অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করবেন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের আপিলেট বোর্ড প্রচণ্ড শক্তিশালী। অন্যদিকে আমাদের এখানে এভাবে এক্সপার্ট সদস্য আছে কি নেই সে বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই। আপিলেট বোর্ড কাদের দ্বারা গঠিত হবে সেটি বিধিতে স্পষ্ট করে দেয়া দরকার।