রূপকথা ও বই পড়া

আজকের পত্রিকা বাসন্তি সাহা প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৯

রূপকথারা রা রা রা রা
চুপকথারা রা রা রা রা


গল্পটা আর কখনো শেষই হয়নি। প্রতি রাতেই আমি জানালার ফাঁক দিয়ে আসা আলোর নকশা দেখতে দেখতে ভাবতাম, ঘর থেকে লেবুতলা কত দূর হতে পারে! প্রতিদিনই এমন হতো।


‘ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি মোদের বাড়ি এসো/ খাট নেই পালঙ্ক নেই চোখ পেতে বসো’ শোনার সঙ্গে সঙ্গেই একটা ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে চোখের সামনে—ঠাকুরমার একটি হাত আমার গায়ের ওপর আর একটি হাতে হাতপাখা ঘুরছে। চোখ বন্ধ হয়ে আসছে ঘুমে। তিনি আমাকে ঘুম পাড়াচ্ছেন কত রকম গল্প বলে। ঘুমে তার চোখ জড়িয়ে আসছে। আর আমি তাড়া দিতাম, ‘কই বলো! তারপর কী হলো?’


‘ভূত ঘরে বসেই হাত বাড়িয়ে বাগান থেকে লেবু ছিঁড়ে দিল।’ তারপর তিনি ঘুমিয়ে পড়তেন।


ঘুমপাড়ানি গান আজ বাচ্চাদের জীবনের সঙ্গে আর জোড় বেঁধে নেই। বিচ্ছেদ হয়ে গেছে বহু দিন হলো। ঝাপসা আবেগমাখা গলায় ঘুমকে চোখ পেতে বসতে বলার মধ্যে যে মমতা থাকে, আদর থাকে, সেটা পেতে গেলে যে পরিমাণ বোকামি আর কল্পনাশক্তি থাকতে হয়, তা আজ বাচ্চাদের কোথায়? আমরাই তাদের এক ‘রেসিং’ ট্রাকে তুলে দিয়েছি।


তারা আজ বড় বড় বিস্ময়ের পেছনে ছুটছে। তারা আজ জানে চরকাকাটা বুড়ি বলে চাঁদে কেউ থাকে না। রাক্ষস আর ভূত বলে যে কিছু নেই, সেটাও জানে। ইউটিউবে দেখে শেষ করে ফেলেছে ঠাকুরমার ঝুলি। মায়েরা অসহায়, নতুন কোনো গল্প নেই। দাদি-ঠাকুরমাদের গল্প তো চলেই না। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে। পরদিন সকালে স্কুল, কোচিং, বিকেলে গান, ছবি আঁকা, তায়কোয়ান্দো, আরও কত কী!


ক্লাসের পাঠ্যবই শেষ করে অন্য বই পড়ার সময়ও নেই তাদের কাছে। বাড়তি সময় যদি কখনো মেলে, সেখানেও চলে এসেছে ইউটিউবের নানা রকম রঙিন জগৎ। ৮ বছরের ক্লাস ওয়ানে পড়া শিশু স্বপ্নময়কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘বই পড়তে ভালো লাগে?’ 
চুপ করে থেকে বলল, ‘না।’ 
‘কেন ভালো লাগে না?’ 
‘কেউ সাথে সাথে বললে ভালো লাগে।’ 
ইউটিউবে সে দেখা, শোনা দুটোই পায়। একটুও মাথা খাটাতে হয় না তার। 


সোম মঙ্গল বুধ এরা সব
আসে তাড়াতাড়ি, 
এদের ঘরে আছে বুঝি
মস্ত হাওয়াগাড়ি? 
রবিবার সে কেন, মা গো, 
এমন দেরি করে? 
ধীরে ধীরে পৌঁছয় সে
সকল বারের পরে। 
আকাশপারে তার বাড়িটি
দূর কি সবার চেয়ে? 
সে বুঝি, মা, তোমার মতো
গরিব-ঘরের মেয়ে? 
—রবিবার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 


এই কবিতা আজ ওদের কাছে বড্ড অচেনা। পড়লেও এখানে সে কিছু পাবে না। আমি মাঝে মাঝে তাকে সকুমার রায় বা লীলা মজুমদারের গল্প পড়ে শুনিয়েছি। আমার মেয়ে তিস্তা যেমন বলে, ‘আমি “রিলেট” করতে পারছি না’ বা ‘“ইমাজিন” করতে পারছি না।’ 
 ‘কেন পারো না? আমরা তো পারতাম।’ 


ও বলে, ‘আমার মনোযোগ দেড় সেকেন্ডের মধ্যে অন্যদিকে চলে যায়। বইয়ে মন থাকে না।’ 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us