এবড়োথেবড়ো মেঠো রাস্তাটা বাড়ির ফাঁকফোকর এড়িয়ে গড়িয়ে পড়েছে মাঠে। দুয়েকটা মজাপুকুর, আম-কাঁঠাল-সুপারি-নারকেল গাছের সারি সব মিলিয়ে শান্ত ছায়াছন্ন গ্রাম মোক্তারপুর। তবে গ্রামের এই ছায়ায় যেন শান্তি নেই। ছড়িয়ে আছে অভাব!
গ্রামের অধিকাংশের দুই-পাঁচ কাঠা জমি। সম্বল বলতে বছরে দুটো চাষ। তাতে সাধারণমানের ধান আর কিছু রবি ফসল। আবাদ ওইটুকুই। গ্রামের মানুষের কাছে বিদেশই ভরসা। কিন্তু কতদিন বিদেশে থাকবে ওরা। ২০, ২৫ বা ৩০ বছর প্রবাসে থেকেও কি ওরা থিতু হওয়ার জন্য দেশে ফিরতে পারবে না? একটা কাজ জুটিয়ে জীবনের বাকি দিনগুলো কি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কাটাতে পারবে না?
মোক্তারপুর গ্রামের মানুষরা পারছে না। শুধু গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুরই নয়, সারা দেশের একই চিত্র। যারা বছরের পর বছর বিদেশে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে সংসারের ঘানি টেনেছেন, তাদের অনেকেই দেশে ফিরে দিন পার করতে পারছেন না। ব্যর্থ হয়ে তারা ফের বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করেন। জীবনকে আবার নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শরীর যৌবনে যে সাপোর্ট দিয়েছে, তা কি প্রায় বার্ধক্যে পৌঁছে দিতে পারবে? জীবনযুদ্ধে ফিরে আসার লড়াইয়ে পুঁজি বলতে কিচ্ছু নেই। ৩০ বছর আগে জমিজিরাত বিক্রি করে বা ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে যেভাবে দেশ ছেড়েছেন, ঠিক একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি।