শীতের সময় কারিগরি কারণে গ্যাস সরবরাহ কম থাকে, এটা সবারই জানা। কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস–সংকটের কারণে যেভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত ও শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হলো, সেটা ছিল চিন্তারও বাইরে। বাংলাদেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট, বর্তমানে সরবরাহ নেমে এসেছে ২৫০ কোটি ঘনফুটের নিচে। অন্যদিকে দৈনিক এলএনজির চাহিদা ৮০ কোটি ঘনফুট, সরবরাহ হয় ৬০ কোটি ঘনফুট।
আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল। গত ১ নভেম্বর মার্কিন এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনালটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার রক্ষণাবেক্ষণ শেষে ফিরে আসার পর টার্মিনালটি চালু করা হয়। কিন্তু ত্রুটির কারণে চালুর পর ফের বন্ধ হয়ে যায়।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কারিগরি ত্রুটির কারণে এলএনজি টার্মিনালে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস–সংকট মারাত্মক রূপ নেয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টার্মিনালে ত্রুটি সারিয়ে সরবরাহ শুরু হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
পূর্বাঞ্চলে গ্যাস–সংকটের মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলী বিতরণ কোম্পানির (কেজিডিসিএল) আওতাধীন চট্টগ্রাম, বাখরাবাদের কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা। এ ছাড়া ঢাকার পাশের তিতাসের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জও এই সংকটের মধ্যে পড়ে। এসব জেলায় জাতীয় গ্রিডের পাশাপাশি এলএনজির বড় অংশ সরবরাহ করা হয়।
কেবল চট্টগ্রাম অঞ্চল নয়, দেশের অন্যান্য স্থানেও গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অনেক কম। ফলে অনেক বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলছে না, অনেক সিএনজি স্টেশনের সামনে গ্যাসপ্রার্থী যানবাহনের দীর্ঘ সারি। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সানাউল রাব্বি এ ধরনের বিপর্যয় রোধে বিকল্প ব্যবস্থা রাখার কথা বলেছেন।