আজ ২০ জানুয়ারি, ‘বাড়িতে ফোন ছাড়া দিন’ (নো ফোনস অ্যাট হোম ডে)। যুক্তরাজ্যের মনোরোগ চিকিৎসক শার্লট আর্মিটেজ দিনটি চালু করেন।
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে হাত-মুখ ধোয়া হলো কি হলো না, মুঠোফোন হাতে ঘাড়-মাথা গুঁজে বসে গেলেন। একটু অবসর হতেই গিন্নির চোখও ফোনের পর্দায় স্থির। কলেজপড়ুয়া ছেলেটির কানে ইয়ারফোন, ক্ষিপ্রগতিতে চলছে হাতের আঙুল। শিশু মেয়েটিও ফোন ছাড়া একদণ্ড থাকতে পারে না। হালফিলে এই হচ্ছে আমাদের পরিবারের রোজকার চিত্র। মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে—ঘরভরা মানুষ। কিন্তু কারও সঙ্গে কারও যেন সংযোগ নেই। সর্বক্ষণ মানসিকভাবে মুঠোফোনে যুক্ত থাকায় পরস্পরের সঙ্গে মানবিক যোগাযোগ কমে যাচ্ছে ক্রমে। ‘পারিবারিক সময়’ বলে যে একটা ব্যাপার আছে, আজকাল তা ভুলতে বসেছি। ব্যাপারটিকে ইংরেজিতে প্রকাশ করা হয় একটি শব্দ দিয়ে—ফুবিং। ফোন ও স্নবিং—শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে পরিভাষাটি। মূলত ফোন ব্যবহারে আসক্তির কারণে সঙ্গের মানুষগুলোর শারীরিক উপস্থিতিকে যে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে অবমাননা করা হয়, তা বোঝাতেই শব্দটির উৎপত্তি।
মুঠোফোন আমাদের ব্যক্তিজীবনের নানা সম্পর্ককে তো ক্ষতিগ্রস্ত করছেই, ভয়ংকরভাবে বিনষ্ট করছে পারিবারিক বন্ধনকেও। মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষত তরুণদের ওপর এই প্রভাব অত্যন্ত উদ্বেগজনক বার্তাই দিচ্ছে। ওয়াশিংটন পোস্ট-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দেখা যাচ্ছে, তরুণদের মধ্যে যাঁরা দিনে এক ঘণ্টা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করেন, তাঁদের চেয়ে যাঁরা পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি করেন, তাঁদের আত্মহত্যার ঝুঁকি ৭১ শতাংশ বেশি।