সামন্ত লাল সেন সমীপে

আজকের পত্রিকা স্বপ্না রেজা প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১

মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও এর গুণগত মান নিয়ে জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। রয়েছে হতাশা। চিকিৎসাসেবা এখন আর সেবা নয়, শীর্ষ বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। অপ্রিয় হলেও সত্য, সাধারণ জনগণ তার ভিটেমাটি বিক্রি করে বেঁচে থাকার অভিপ্রায়ে চিকিৎসা-বাণিজ্যে নিজেদের সমর্পিত করে। এর ওপর রয়েছে চিকিৎসকদের অবহেলা, ভুল চিকিৎসা। স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দুর্নীতির কথা ঘুরেফিরে আসে। আজ আপনার সমীপে, দুটি কথা বলছি।


অতিমারি করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছিল এবং বলতেই হয় সেটা সম্ভব হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তিনি যেভাবে করোনা মোকাবিলার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ ও দেখভাল করেছেন, তাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ দিকে যেতে পারেনি বলে অনেকেই তা মনে করেন। একে তো বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ এবং সেই দেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত দেশের মতো নয়। এতে অতিমারি করোনা নিয়ে সব স্তরের জনগণের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক কাজ করেছিল; বিশেষ করে যেখানে করোনা মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিল, নিরুপায় হয়ে পড়েছিল। করোনাকে প্রতিহত করার মতো কোনো শক্তি, সামর্থ্য, আবিষ্কার ছিল না উন্নত দেশগুলোয়, এমন এক ভয়াবহ বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশের পরিণতি কী হতে পারে, তা নিয়ে ছিল নানান আতঙ্ক আর আশঙ্কা। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবধর্মী উপযুক্ত দিকনির্দেশনা ও হস্তক্ষেপে অতিমারি করোনার ছোবল এ দেশের জনগণের ওপর তেমন প্রবলভাবে পড়েনি। সরকারপ্রধান যেভাবে দেশের প্রতিটি নাগরিককে বিনা মূল্যে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, সেটাও ছিল তাঁর যুগান্তকারী দায়িত্ববোধ ও মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। উন্নয়নশীল দেশে করোনা প্রতিহত করার এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয় এবং সাহসের তো বটেই।


আবার এটাও না বললেই নয়, অতিমারি করোনার মতো এক ভয়ংকর পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কতিপয় অসাধু ব্যক্তির কারণে দুর্নীতি দেখা গেছে, তাদের দুর্নীতির বিষয়টি জনসম্মুখে এসেছে। দুর্নীতিগ্রস্তদের অতিমারি করোনাও পারেনি দুর্নীতি থেকে বিরত রাখতে। সেই সময়ে যদিও তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে, শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং কেউ কেউ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও পেয়েছে। বলা বাহুল্য, স্বাস্থ্যব্যবস্থায় মহা দুর্নীতি—এমন আলোচনা, সমালোচনা, অসন্তোষ বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। প্রতিবছর স্বাস্থ্য খাতে সরকারের উপযুক্ত বরাদ্দ, পরিকল্পনা, জনবল নিয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা থাকলেও দুর্নীতিগ্রস্ত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্টদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা জনগণের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠছে না। জনগণের জন্য নিরাপদ যেমন হতে পারছে না, তেমনি চিকিৎসাসেবা জনগণের আয়-সক্ষমতার মাঝে সহনীয় থাকছে না।


এটা সত্য, স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কমপ্লেক্স নির্মিত হয়েছে। হয়েছে অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন। রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। কোনো কোনো জেলা হাসপাতালে আইসিইউ, সিসিইউর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ স্থাপন করা এবং সেই উপযোগী দামি ও ভারী যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয় বলেও জানা যায়। কিন্তু কোনোভাবেই জানা সম্ভব হয় না, এত আয়োজনের পর চিকিৎসাসেবার গুণগত মান কেমন এবং এই সেবা নিয়মিত ও সবাই সন্তুষ্টিসহকারে পাচ্ছে কি না, তা সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববানেরা আদতে জানেন কি না, কিংবা জানার চেষ্টা করেন কি না। প্রচারমাধ্যমে প্রায়ই সংবাদ হয়ে এসেছে, কোনো কোনো জেলা হাসপাতালের আইসিইউ বা সিসিইউর সব যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে শুধু সেগুলো অব্যবহৃত থাকার কারণে। করোনার সময়ে এই অব্যবস্থাপনার বিষয়টি জনসম্মুখে আসে। অব্যবহৃত থাকার কারণ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, উপযুক্ত লোকবলের অভাব। কী অপরিণত, অপরিপক্ব আর দায়িত্বহীন অজুহাত দিনের পর দিন, তা ভাবতেই হতাশ হতে হয়। এমন মাথা ও মেধা দিয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান চললে রোগ নিরাময়ের ফলাফল কখনোই ভালো হয় না। আবার উপজেলা ও জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসকদের রয়েছে অবস্থান ও কাজ করার প্রবল অনীহা। এমনও দেখা যায়, তাঁদের কেউ কেউ সপ্তাহের এক-দুদিন কর্মক্ষেত্রে কোনো রকম হাজিরা দিয়ে শহর বা রাজধানীতে চলে আসেন। সেখানে তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা-বাণিজ্যে যুক্ত হন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us