শিক্ষার্থীরা কী শিখবে আর কী শিখবে না

আজকের পত্রিকা স্বরোচিষ সরকার প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪২

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এসব বই থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখতে পারবে আর কী শিখতে পারবে না, তা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা চিন্তিত। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের নেতিবাচক কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে তাঁদের চিন্তার মাত্রাও বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যপুস্তক থেকে শিক্ষার্থীরা আসলে কী শিখবে আর কী শিখতে পারবে না, তা কেউ ভালোভাবে যাচাই করে দেখছেন না।


মাঝে মাঝে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আসাটা জরুরি। কারণ সময়ের ব্যবধানে জ্ঞানবিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়, নতুন নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটে, এমনকি মূল্যবোধেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। এগুলোর সঙ্গে শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তককে মানিয়ে নিতে গিয়ে পাঠপদ্ধতিতে ও পাঠ্য বিষয়ে পরিবর্তন না এনে পারা যায় না। ফলে পাঠ্যপুস্তকে নতুন বিষয় যুক্ত হয়, আবার বহু পুরোনো বিষয় বাদ পড়ে। এটাই স্বাভাবিক। মাধ্যমিকের নতুন বাংলা বইগুলোর দিকে তাকিয়ে এই পরিবর্তনের প্রকৃতি উপলব্ধি করা যাক। 


প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে পাঠ্য বিষয়ের পরিবর্তন কতটা অপরিহার্য, বাংলা রচনা শেখানোর ছোট একটা উদাহরণ দিয়ে তা বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেমন আগেকার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ে পিতার কাছে টাকা চেয়ে পুত্রের চিঠি লেখা শেখানো হতো, তাই সেখানে খামের ছবি থাকত, থাকত ঠিকানা লেখার জায়গা। কিন্তু প্রযুক্তির পরিবর্তনে ডাকঘরের প্রয়োজনীয়তা কমে যাওয়ায় এখনকার পুত্ররা তার প্রয়োজনের কথা মোবাইলের মাধ্যমে জানায়। আর্থসামাজিক বাস্তবতার পরিবর্তন ঘটায় কন্যারও টাকার দরকার হয়, মাতার কাছেও টাকা চাইতে হয়। তাই পুত্র বা কন্যাকে এখন পিতা বা মাতা টাকা পাঠান বিকাশ-নগদের মাধ্যমে। নতুন এই প্রজন্মের কাছে তাই পিতার কাছে টাকা চেয়ে পুত্রের চিঠি লেখা শেখানোর কোনো মানে হয় না। 


নতুন পাঠ্যপুস্তক রচনার সময়ে এই সমকালীনতার পাশাপাশি আরও অনেক কিছুই হয়তো খেয়াল রাখতে হয়। যেমন অন্তর্ভুক্তি; অর্থাৎ পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব শিশু যেন সমানভাবে একাত্মতা অনুভব করতে পারে। আবার ছেলে বা মেয়ে কেউ যেন মনে না করে তাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হলো। নানাভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীও যেন এই শিক্ষাক্রমে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, সেদিকে খেয়াল রাখাও অন্তর্ভুক্তির কাজ। বাংলা বইগুলো রচনার সময়ে এই অন্তর্ভুক্তিকে দেখতে গিয়ে অনেক বিষয়কে নতুনভাবে যোগ করতে হয় এবং অনেক বিষয়কে বাদ দিতে হয়, সেটাই স্বাভাবিক। 


পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের সময়ে এসব কথা আগে কখনো ভেবে দেখা হয়েছে, তা মনে হয় না। শুধু এই অন্তর্ভুক্তিই নয়, এবারের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের আগে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, কোন শ্রেণিতে কী পড়ানো হবে, একেক শ্রেণিতে শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার পরে পাঠ্য বিষয়ে কী কী পরিবর্তন আসবে এবং প্রতিটি শ্রেণি সমাপ্ত করার পরে শিক্ষার্থী ঠিক কী কী যোগ্যতা অর্জন করবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এমন সাতটি যোগ্যতার উল্লেখ বইগুলোর ভূমিকায় করা হয়েছে। এসব যোগ্যতা পূরণ করা সম্ভব হলে দশম শ্রেণির মধ্যেই শিক্ষার্থীর ভাষাদক্ষতা এমন অবস্থায় পৌঁছাবে, যাতে মাতৃভাষা বাংলায় সব ধরনের যোগাযোগ করতে শিক্ষার্থীরা সক্ষম হবে। সাহিত্যও যে যোগাযোগের একটা মাধ্যম, এই মাধ্যম লেখকের সঙ্গে পাঠককে যুক্ত করে, এবারের পাঠ্যপুস্তক থেকে সেটাও ভালো বোঝা যাচ্ছে। 


প্রশ্ন উঠতে পারে, এতগুলো যোগ্যতা পূরণের জন্য প্রতিটি শ্রেণিতে মাত্র একটা বাংলা বই কি যথেষ্ট; যেখানে পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমে প্রতিটি শ্রেণিতে তিন-তিনটি বাংলা বই ছিল? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আগেকার কোনো একটি শ্রেণির তিনটি বইয়ের সঙ্গে বর্তমান শিক্ষাক্রমের ওই শ্রেণির বাংলা বইটির তুলনা করে দেখা যেতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us