ক্রমাগত লোকসান ও অর্থ সংকটে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। পরিশোধ করতে পারছে না বেসরকারি উৎপাদনকারীদের (আইপিপি) কাছ থেকে কেনা বিদ্যুতের দাম। সরকার এতদিন ভর্তুকি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও এখন সেটিরও জোগান দেয়া যাচ্ছে না। এরই মধ্যে আইপিপিগুলোর কাছে বিপিডিবির দেনা ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় সরকার পরিকল্পনা করছে ভর্তুকির অর্থ নগদে পরিশোধ না করে স্পেশাল ট্রেজারি বন্ডে রূপ দেয়ার।
বিপিডিবির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্থাটি বিদ্যুৎ কেনায় মোট অর্থ ব্যয় করেছে ৯৮ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু আইপিপি থেকেই কেনা হয়েছে প্রায় ৫৯ হাজার ২৩ কোটি টাকার বিদ্যুৎ। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে এ বাবদ বিপিডিবির ব্যয় ছিল ৪৯ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী গত অর্থবছরে আইপিপি থেকে বিদ্যুৎ কেনায় বিপিডিবির ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৯ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা।
আইপিপিগুলোর কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনছে বিপিডিবি। আবার এ দামও ক্রমেই বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আইপিপি থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কেনায় সংস্থাটির ব্যয় হয়েছে ১৪ টাকা ৬২ পয়সা। যেখানে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে এ মূল্য ছিল ৬ টাকা ৬২ পয়সা। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিপিডিবি আইপিপিগুলোকে প্রতি ইউনিটের দাম পরিশোধ করেছিল ১১ টাকা ৫৫ পয়সা।
জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইপিপি-নির্ভরতায় বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মুনাফার সুযোগ বাড়লেও চাপ পড়েছে রাষ্ট্রের কোষাগারে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) বিদ্যমান মডেল থেকে বেরিয়ে আসা ও আইপিপিগুলোর সঙ্গে এরই মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিগুলো পুনর্মূল্যায়নের বিকল্প নেই।