গ্রীষ্মকালে যখন বিদ্যুৎ আর গ্যাস–সংকট চরমে পৌঁছেছিল, তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল শীতকালে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। শীতকালে চাহিদা কম থাকায় বিদ্যুতের গ্রাহকেরা কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও গ্যাস–সংকটে পড়েছেন শিল্পকারখানা ও বাসাবাড়ির গ্রাহকেরা।
বাংলাদেশে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত বিদ্যুতের বড় অংশ আসে গ্যাসচালিত নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র (ক্যাপটিভ) থেকে। দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমতে থাকায় ২০১৮ সাল থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হচ্ছে। এখন দেশে গ্যাসের উৎপাদন আরও কমে এসেছে। অন্যদিকে ডলার–সংকটের কারণে প্রয়োজনমতো এলএনজিও আমদানি করা যাচ্ছে না।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় দৈনিক ১১০ থেকে ১১২ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে শিল্প খাতে। এখন দিনে সরবরাহ করা হচ্ছে ৭০ কোটি ঘনফুট। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। বর্তমানে ২৫০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে গ্যাসের সরবরাহ।
আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য নির্মিত দুটি টার্মিনালের মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি গত ১ নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে সংস্কারকাজের জন্য। এখন শুধু সামিট গ্রুপের ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে ৫০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। দুটি টার্মিনাল মিলে দিনে ৮৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো।
উৎপাদনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র হবিগঞ্জের বিবিয়ানায় উৎপাদন কমছে। যদিও বিকল্প হিসেবে সম্প্রতি ভোলা থেকে সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি করে সরবরাহ শুরু হয়েছে ঢাকার আশপাশের কিছু শিল্পকারখানায়। যদিও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এ অবস্থায় কারখানাগুলোতে উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একটি রপ্তানিমুখী টোটাল ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাস-সংকটে কারখানার উৎপাদন তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। নারায়ণগঞ্জে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার সংখ্যা আট শতাধিক। এর মধ্যে ডাইং প্রতিষ্ঠান তিন শতাধিক।