১৬ ডিসেম্বর ইয়েমেনের হুতিরা একগুচ্ছ ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস কার্নি সব ড্রোনই গুলি করে বিধ্বস্ত করে। খবরে প্রকাশ, ১৪টি ড্রোন দিয়ে এ হামলা চালানো হয়েছিল। সেন্টকম বা ইউনাইটেড স্টেটস সেন্ট্রাল কমান্ড এ হামলার বিষয়টি স্বীকার করলেও তারা এ বিষয়ে কিছু বলেনি যে ড্রোনগুলোর লক্ষ্যবস্তু ইউএসএস কার্নি ছিল কি না।
হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনগুলোর মডেল কী ছিল, সে বিষয়েও কিছু জানায়নি সেন্টকম। কিন্তু সেগুলো ইরানের শাহেদ-১৩৬ মডেলের ড্রোন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একই ধরনের ড্রোন রাশিয়াকে দিয়েছে ইরানিরা। এখন এই মডেলের ড্রোন রাশিয়াতেই তৈরি হচ্ছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে গেরান-২। রাশিয়ার তৈরি করা এই ড্রোনগুলো এক হাজার মাইল পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম। এগুলো ৫০ কেজি পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে।
হুতি বিদ্রোহী শাহেদ ড্রোনের মূল যে ধরন ব্যবহার করেছে, তাতে কোনো ক্যামেরা ছিল না। হয় স্থলভাগ থেকে পরিচালকেরা ড্রোনগুলোর গতিপথ ঠিক করেছেন অথবা আগে থেকে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত করার জন্য জিপিএস প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়েছে।
চলাচলের মধ্যে থাকে, এমন কোনো লক্ষ্যবস্তুর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কোনো কাজে আসে না। ধারণা করা যায় যে হুতিরা স্থল থেকেই ড্রোনগুলো লক্ষ্যবস্তুর দিকে পরিচালিত করেছে। এ ছাড়া ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট ব্যবহার করে লোহিত সাগরে জাহাজ আক্রমণ করার চেষ্টা করেছে হুতিরা।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে আন্তর্জাতিক জাহাজ কোম্পানিগুলো লোহিত সাগর রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। সুয়েজ খাল দিয়ে তারা আর জাহাজ পাঠাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হুতিরা এ ধরনের ভয়াবহ হামলা করার পরও বাইডেন প্রশাসন অবিচলভাবে হুতির সামরিক স্থাপনা, কমান্ড সেন্টার কিংবা ড্রোন উৎক্ষেপণস্থলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।
একমাত্র যে পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা নিয়েছে, সেটা হলো হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট তারা আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে কিংবা ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক নৌপথের নিরাপত্তাসংক্রান্ত যে বিধিবিধান, সেটা ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা এ কাজ করতে পেরেছে।
হুতিরা এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজ ও কনটেইনারবাহী জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু কয়েকটি জাহাজ এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেগুলো মেরামতের জন্য পার্শ্ববর্তী কোনো বন্ধুদেশের বন্দরে ভেড়াতে হয়েছে।