সন্তানকে সুশিক্ষায় বড় করে তুলতে কিছুটা শাসন তো করতেই হয়, কিছু ক্ষেত্রে আচরণেও হতে হয় দৃঢ়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, সেটি যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়ে যায়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ বলেন, অতিরিক্ত কড়া শাসনের বেড়াজালে বেড়ে ওঠা শিশু জেদি হয়ে ওঠে। তার মধ্যে রেগে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। পরে তার আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিও হতে পারে। দুশ্চিন্তা কিংবা হতাশার মতো মানসিক সমস্যায়ও সে ভুগতে পারে। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে তারা মা-বাবা, ভাই-বোন বা বন্ধুদের সঙ্গে সুস্থ সম্পর্কও তৈরি করতে পারে না। এমনকি একপর্যায়ে নেশাগ্রস্তও হয়ে পড়তে পারে। তাই সন্তান পালনের ক্ষেত্রে আদরের সঙ্গে শাসনের ভারসাম্য রাখাটা খুবই জরুরি।
অভিভাবক হিসেবে আপনি অতিরিক্ত কঠোর কি না, সন্তানের মধ্যে নিচের পাঁচটি লক্ষণ দেখে তা বুঝতে পারবেন—
১. সহজভাবে কথা না বলা
স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে থাকা একটি শিশু যেকোনো বিষয় নিয়ে তার অভিভাবকের সঙ্গে সহজভাবে কথা বলবে। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত কঠোর অভিভাবক হন, তাহলে শিশু নিজের মনের কথা মনেই চেপে রাখবে। তার হাসি-আনন্দের কথা, এমনকি তার কষ্টের কথাও মন খুলে আপনাকে বলতে পারবে না। কোনো কোনো বিষয়ে কথা বলার সময় তার ভঙ্গি এবং চাহনির পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারেন। এমনো হতে পারে, আপনি হঠাৎ এমন কোনো ঘটনা সম্পর্কে জানলেন, যা স্বাভাবিকভাবে তার আপনাকে বলার কথা ছিল, কিন্তু বিষয়টি সে গোপন করেছে কিংবা আংশিক বলেছে।
২. সিদ্ধান্ত নিতে না পারা
অনেক অভিভাবক শিশুর খাবার, পোশাক, পড়ার সময়, খেলাধুলার ধরন প্রভৃতির ওপর নিজের মতামত চাপিয়ে দেন। নিজের স্বপ্নের বোঝাও অনেকে চাপিয়ে দেন। ব্যক্তিগত জীবনে নিজের মতামত প্রকাশ করতে না পারার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে শিশুর ওপর। তাই যদি দেখেন, কোনো বিষয়ে শিশু সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বা তার আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে বলে মনে হচ্ছে, তাহলে একবার ভেবে দেখুন তো তার এই পরিস্থিতির জন্য আপনিই দায়ী কি না।