অভিবাসন, ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ নানা কারণে রেকর্ডসংখ্যক বাংলাদেশী বিদেশ যাচ্ছেন। আবার এয়ারলাইনসগুলোর টিকিটের মূল্যও বেড়েছে অর্ধেকের বেশি। সব মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশ ভ্রমণ বাবদ আগের অর্থবছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি ব্যয় করেছেন বাংলাদেশীরা। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদেশ ভ্রমণ খাতে বাংলাদেশের ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে তা ১৫ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘ব্যালান্স অব পেমেন্ট’ বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের সেবা খাতে ব্যয়ের বড় দুটি খাত হলো পরিবহন ও ভ্রমণ ব্যয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছরে বিদেশ থেকে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন ব্যয় কিছুটা কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে স্থল, জল, আকাশ ও রেলপথে বিদেশ থেকে পণ্য আনা-নেয়ায় বাংলাদেশের ব্যয় ছিল ৭১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ ব্যয় ৭০ হাজার ৬১ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। সে হিসাবে পরিবহন খাতে ব্যয় কমেছে ১ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। বিপরীত ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশীদের বিদেশ ভ্রমণ ব্যয়ে। গত অর্থবছরে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিদেশ ভ্রমণ ব্যয় বেড়েছে ৪০ শতাংশের বেশি। আর ৮১ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়েছে ব্যক্তিগত ভ্রমণ ব্যয়।
দেশের ‘ব্যালান্স অব পেমেন্ট’সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ। বিভাগটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, সরকারি-বেসরকারি ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে কিংবা কোনো সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য বিদেশ ভ্রমণে গেলে সেটি ব্যবসায়িক ভ্রমণ হিসেবে দেখা হয়। আর পর্যটন, শিক্ষা, চিকিৎসা, ধর্মীয়সহ অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বিদেশ গেলে সেটিকে দেখানো হয়েছে ব্যক্তিগত ভ্রমণ ব্যয় হিসেবে। এ ব্যয় মূলত এয়ারলাইনসের টিকিট মূল্য।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিবাসন, পর্যটনসহ নানা কারণে বিদেশগামী যাত্রীর সংখ্যা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এয়ারলাইনসগুলোও টিকিটের দাম বাড়িয়েছে অস্বাভাবিক হারে। আবার ডলারের বিপরীতে টাকার রেকর্ড অবমূল্যায়ন হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশীদের বিদেশযাত্রার ব্যয় এত পরিমাণ বেড়েছে।