গ্রামের গৃহস্থ পরিবারগুলো নতুন ফসল ওঠার পর সাধারণত নিজেদের সারা বছরের চাল ও ডাল মজুত রেখে বাকিটা বিক্রি করে। তারা মনে করে, ঘরে খাবার থাকাটা সবচেয়ে জরুরি।
গ্রামের মানুষের এই খাদ্য নিরাপত্তা চিন্তা রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দেশের মানুষের জন্য খাদ্য দেশেই উৎপাদন করতে হবে। মনে রাখা দরকার, সংকটকালে কেউ খাদ্য বিক্রি করে না। যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আমরা দেখলাম বিভিন্ন দেশ চাল ও গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এতে বিশ্ববাজারে দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেল, আমরা ভুক্তভোগী হলাম।
বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। কারণ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমছে। এ অবস্থায় প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স বাড়ানো, রপ্তানি বাড়ানো, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগী সরকার। আমদানি নিয়ন্ত্রণেও কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা সহজে কাটবে বলে মনে হয় না।
এমন পরিস্থিতিতে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে আমরা কৃষি খাতে কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনার কথা ভাবতে পারি। আমরা জানি চাল, গম, ভোজ্যতেল, চিনি, ভুট্টা, ডাল, মসলা, ফল, সবজি (মূলত টমেটো), নারকেল, নারকেলের শাঁস ও সারের মতো পণ্য আমদানিতে বিপুল ব্যয় হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) উপাত্ত বলছে, কৃষি পণ্য আমদানিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশকে ১০ বিলিয়ন ডলারের (১ হাজার কোটি ডলার) বেশি ব্যয় করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) হিসাবে, একই অর্থবছরে সার আমদানিতে ব্যয় ৫ বিলিয়ন ডলারের (৫০০ কোটি) বেশি।