আজ দেশের প্রায় সব সংবাদমাধ্যম কৃষি সংবাদকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করছে। আমাদের আজকের যে কৃষি সাফল্য এর পেছনে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নেওয়া পদক্ষেপ, গবেষণার সাফল্য, কৃষি শিক্ষার প্রসার এবং গণমাধ্যমের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে।
কৃষি একমাত্র একক খাত, যার সঙ্গে প্রত্যেক মানুষই কোনো না কোনোভাবে জড়িত—কখনো কৃষক, কখনো ভোক্তা, আবার কখনো বাজার ও সরবরাহব্যবস্থার পক্ষ হিসেবে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল কৃষিপ্রধান দেশে কৃষি যতটুকু গুরুত্ব পাওয়া দরকার, অনেক সময়ই তা লক্ষ করা যায় না। অথচ বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তার বলয়টি সুসংহত রাখতে বিশাল ভূমিকা রাখছে আমাদের কৃষি।
গণমাধ্যমে কৃষির বিষয়বস্তুর আঙ্গিকের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, বিশেষ অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কৃষিসংবাদও এখন মূলধারার সংবাদ হিসেবে স্থান পাচ্ছে। এটি বেশ আশার কথা। তবে বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও বিশেষায়িত বিষয় হিসেবে কৃষি নিয়ে সংবাদ প্রাধান্য এখনো অনেক কম।
কৃষির মতো একটি বহুমুখী বিষয়ে সংবাদপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন কিছু প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন। সবার আগে প্রয়োজন কৃষি বিষয়ে সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের তৈরি করা। সাংবাদিকতা শিক্ষার কারিকুলামে কৃষি সাংবাদিকতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
কৃষিকে জীবনোপায়, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, শিল্প, ব্যবসা, অর্থনীতি, শিক্ষা, নীতি, দর্শন ইত্যাদি যেকোনো দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা হোক না কেন, এটি সব সময়ই একটি অপরিহার্য বিষয় হিসেবেই স্থান পাবে। বাংলাদেশের সিংহভাগ কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত—এ সত্যটি যেমন চিরন্তন, তেমনি অন্য যেকোনো বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় বাংলাদেশে কৃষি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও কম নয়। এসব উদাহরণ স্পষ্ট ধারণা দেয়, কৃষি সত্যিই কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই কৃষি সাংবাদিকতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।