চলতি বছরে বাংলাদেশে নতুন করে এইডসে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২৫০ জন। অর্থাৎ দেশে দিনে অন্তত তিনজন করে এইডস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রচার চালানো হচ্ছে না। ফলে একটি বড় জনগোষ্ঠী ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে এইডসের কারণে মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ও এইডস আক্রান্তদের প্রতি সমবেদনা জানাতে ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস পালন করা হয়। ২ ডিসেম্বর দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের নেতৃত্বে এই দিবস পালিত হবে। এর আগে এমন তথ্য জানা গেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে এইডসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ৬৫৮ জন। ২০২১ সালে এই সংখ্যা হয় ৭২৯। ২০২২ সালে এইডস রোগী শনাক্ত হয় ৯৪৭ জন। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ৩০৩ জন বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছর নতুন করে যে ১ হাজার ২৫০ জন শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে সাধারণ মানুষের সংখ্যাই বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পুরুষ যৌনকর্মীর (সমকামী) ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।
একসময় দেশে এইচআইভির সংক্রমণের ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি ছিল শিরায় মাদকগ্রহণকারী, হিজড়া ও যৌনকর্মীরা। বর্তমানে তাদের মধ্যে সংক্রমণ কমে আসছে। আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বাড়ছে পুরুষ সমকামীদের মধ্যে। এ ছাড়া ২০২২ সালে দেশের ৯ কারাগারে এইচআইভি সংক্রমণ শনাক্তের কার্যক্রম শুরু হয়। চলতি বছরে ৯টি কারাগার থেকে ৭ জনের এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই মাদক মামলার আসামি।
এদিকে এইচআইভির সংক্রমণ নিয়ে আরেকটি তথ্য সামনে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস প্রোগ্রামের তথ্যমতে, প্রতিবছর নতুনভাবে শনাক্ত এইডস রোগীদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অভিবাসী অথবা তাদের পরিবারের সদস্যরা। মধ্যপ্রাচ্যসহ কয়েকটি দেশে প্রবেশের আগেই এইচআইভি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক থাকলেও আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।