আমাদের দেশে ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনার ধাক্কা লাগে। ২০২১ সালের অক্টোবরে ইউনিসেফ ও ইউনেসকো এশিয়ায় শিক্ষা খাতের ওপর ‘কভিড-১৯-এর প্রভাব ও মোকাবিলা কার্যক্রমবিষয়ক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছিল, কভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর থেকে বাংলাদেশের স্কুল এবং কলেজে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। এর ফল পাওয়া গেল দুই বছর পর। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, পূর্ণ নম্বরে সব বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ এবং শিখন ঘাটতি ও শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটার ফলে এইচএসসিতে জিপিএ ৫-এ ভরাডুবি হয়েছে। আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই ফলাফল করোনার আগের ফলাফলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দশম শ্রেণি থেকে পড়ালেখায় ঘাটতি তৈরি হওয়া এই ব্যাচের এইচএসসিতে এসে সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে পরীক্ষায় বসতে হয়। ফলে পাসের হার সামান্য কমলেও জিপিএ ৫-এ ভরাডুবি হয়েছে। এ বিষয়ে দেশ রূপান্তরে সোমবার প্রকাশিত ‘করোনার ফলে জিপিএ ৫ অর্ধেক’ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। একদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানাচ্ছেন, গতবার পরীক্ষা সহজ ছিল। কম বিষয়, কম সময় ও কম নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হয়। এ জন্য পরীক্ষাও তুলনামূলক কঠিন হয়। ফলে পাসের হার ও জিপিএ ৫ কিছুটা কমেছে।
আবার আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এসএসসিতে কম বিষয় ও নম্বরে পরীক্ষা দিয়েছিল। এবার তারা সব বিষয়ে প্রায় পূর্ণ নম্বরেই পরীক্ষা দিয়েছে। করোনাকালে যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরাসরি বন্ধ ছিল, তাতে পড়ালেখার কিছুটা ঘাটতি হতেই পারে। তবে আমরা যদি করোনার আগের ২০১৯ সালের এইচএসসির ফলের সঙ্গে এবারের ফলের তুলনা করি, তাহলে দেখা যাবে ফল কিন্তু একই আছে; অর্থাৎ আমরা ফলাফলের দিক দিয়ে কিন্তু একই জায়গায় আছি।’