এরশাদ সরকারেরর পতনের আগ মুহূর্তে ডা. মিলনের রক্তদান এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনেরর এক টার্নিং পয়েন্ট। তার আত্মদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন দুর্বার গণআন্দোলনে পরিণত হয়। ত্বরান্বিত হয় এরশাদ সরকারের পতন আন্দোলন।
যারা রাজনীতি নিয়ে ভাবেন, রাষ্ট্রকে নিয়ে চিন্তা করেন, গণতন্ত্র ও গণমানুষের চাওয়া-পাওয়া যাদের চিন্তা-চেতনাকে পরিচালিত করে সেসব গণতন্ত্রমনাদের কাছে তাতাই ২৭ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন।
১৯৯০ সালে এই দিনে তৎকালীন সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে সামরিকজান্তার পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সন্নিকটে ডা. মিলন শহীদ হন। যার চেতনায় ছিল মুক্তিযুদ্ধ, হৃদয়ে ছিল বাংলাদেশ আর দুচোখ ভরা স্বপ্ন ছিল শোষণ মুক্ত অসাম্প্রদায়িক চেতনার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ।
ডা. মিলনের শাহাদাতের কয়েকদিনের মধ্যেই গণআন্দোলন ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটে। নিশ্চিত হয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ।
ডা. মিলন, পুরো নাম শামসুল আলম খান মিলন। ডা. মিলন নামেই তিনি আজ গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে সবার মাঝে বেঁচে আছেন।
ডা. মিলন একজন সাহসী প্রগতিশীল রাজনীতিক ছিলেন। সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশে একটি প্রগতিশীল আধুনিক অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠন করাই ছিল তার স্বপ্ন। এ স্বপ্নকে লালন করতে গিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিলেন তিনি।
ডা. মিলন বাংলাদেশের পেশাজীবী আন্দোলনের একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন। নিজের চিকিৎসা পেশার সেবা ও মানবকল্যাণে নিবেদিত থাকার পাশাপাশি পেশার দক্ষতা, গুরুত্ব ও পেশাজীবীদের দাবি আদায়ে সবসময়ই ছিলেন আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকায়।