‘প্রিয় সেবাপ্রার্থী, নারী ও শিশু নির্যাতন-সংক্রান্ত সেবা প্রদানে আমাদের সকল কর্মকর্তা এই মুহূর্তে ব্যস্ত রয়েছে। অনুগ্রহপূর্বক অপেক্ষা করুন’—নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জাতীয় হেল্পলাইন ১০৯-এ ফোন করলে অপর প্রান্ত থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই কথাগুলোই বলা হয়। নির্যাতনের শিকার নারীদের সাহায্য করতে ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইনটির সেবা দেওয়ার কথা। অথচ এই নম্বরে রাত-দিন প্রায় কখনোই সাড়া পাওয়া যায় না। সেবাপ্রার্থীদের অপেক্ষার সময় তাই আর ফুরোয় না।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি নিজে কখনো ফোন করে দেখিনি। তবে অনেকের কাছে আমরা এটা নিয়ে অভিযোগ শুনেছি। সরকারি এমন আরও সেবা আছে, যেগুলোর কার্যকারিতা নেই। এ ক্ষেত্রে জবাবদিহি প্রয়োজন।’
গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ১০৯ নম্বরে অন্তত ৬০ বার ফোন করে মাত্র একবার সাহায্য প্রদানকারীর সাড়া পাওয়া যায়। তিনি জানান, সাহায্যপ্রার্থীদের ফোনের কারণে লাইনগুলো ব্যস্ত থাকে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় ২০১২ সালে টোল ফ্রি ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার কাজ শুরু করে। তখন নম্বরটি ছিল ১০৯২১। পরে ২০১৭ সালে নম্বরটি ১০৯ করা হয়। সপ্তাহে ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের এ সেন্টারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার কথা। এ বছর তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকেও নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ রোধসংক্রান্ত তাৎক্ষণিক সহায়তার লক্ষ্যে টোল ফ্রি হেল্পলাইন ১০৯-এর বিষয়টি যুক্ত করা হয়।
হেল্পলাইনের প্রোগ্রাম অফিসার রাইসুল ইসলাম জানান, সেন্টারে প্রতিদিন গড়ে ৬-৭ হাজার ফোন গ্রহণ করা হয়। ২০১২ সাল থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬৬ লাখ ৪৪ হাজার ৩৯৫টি কল গ্রহণ করা হয়েছে। এই সেন্টারের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ওই সময় পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৭২০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়। সেন্টারে কল গ্রহণ করার জন্য ৪০ জন কর্মী এবং একজন ইনচার্জ রয়েছেন।