গাড়িতে বসে একজন সহযাত্রীর সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা হচ্ছিল। সহযাত্রী বয়সে তরুণী, বিবাহিত। পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বর একটি প্রাইভেট ব্যাংকের অফিসার। কথা প্রসঙ্গে তরুণী জানালেন তাঁদের বিয়ের চার বছর পেরিয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পরই অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন। যখন দুই মাস, সেই সময় দেশে মহামারি করোনার ভয়ংকর অবস্থা। তাঁর বাবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবার সেবা করতে গিয়ে তিনি নিজেও আক্রান্ত হন। করোনার চিকিৎসাকালীন তাঁর অ্যাবরশন হয়। অবস্থা খুব খারাপ ছিল। চিকিৎসকদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তিনি বেঁচে যান।
ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছিলেন শিগগিরই যেন আর কনসিভ না করেন, সে জন্য সতর্ক থাকতে। তাই এত দিন বাচ্চা নেওয়ার কথা ভাবেননি। এখন পুরোপুরি সুস্থ। বর-বউ দুজনই চান একটা সন্তান আসুক। কিন্তু চাইলেই তো আর হয় না সব সময়। সে জন্য তাঁরা মোটেই চিন্তিত নন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে পরিবার-পরিজন, এমনকি পাড়া-প্রতিবেশীর যন্ত্রণা। সবার এক প্রশ্ন—বাচ্চা হচ্ছে না কেন?
মাতৃত্বেই যদি নারীর পূর্ণতা হয় তাহলে পিতৃত্বেও পুরুষের পূর্ণতা কেন নয়? মাতৃত্বের জন্য কোনো নারীর হাহাকার থাকতেই পারে, কিন্তু সেটা না পেলে তাঁর জীবন অপূর্ণ, এমন প্রবাদ তো রটিয়েছে আসলে পিতৃতন্ত্র। মাতৃত্বকে মহার্ঘ করে নারীকে ঘরে আটকে রাখা সবচেয়ে সহজ। অথচ বিপরীতে পিতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা পুরুষের মনেও থাকে। কিন্তু পিতৃত্বেই পুরুষের পূর্ণতা—এ রকম কোনো প্রবাদ সমাজে নেই।