ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের হামলার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার নামে এক মাস আগে যে যুদ্ধ শুরু করেছিল ইসরায়েল, এখন তা জাতিনিধনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু নিহত হচ্ছে। প্রতি তিনজন নিহতের একজন হয় শিশু অথবা নারী।
একটি জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূলের লক্ষ্যে পরিচালিত যুদ্ধের নামে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠেছে বিশ্বের অধিকাংশ রাজধানীতে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের সামনে কয়েক লাখ মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে এই জাতি হত্যা বন্ধ করতে হবে।
অনেকেই বলছেন, প্রতিবাদের তীব্রতা সত্তর দশকে ভিয়েতনামবিরোধী বিক্ষোভের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এই প্রতিবাদ বিক্ষোভে ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষও যোগ দিয়েছিলেন।
এবারের প্রতিবাদের একটি লক্ষণীয় ব্যতিক্রমী বিষয় হচ্ছে, শুধু ছাত্র বা রাজনৈতিক কর্মীরাই নন, সমাজের নানা অংশের মানুষ এসব কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রশাসনে চাকরি নিয়েছেন এমন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র দপ্তরের সদস্য, এমনকি মার্কিন কংগ্রেসে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরাও রয়েছেন।
গত সপ্তাহে ক্যাপিটল হলের সিঁড়িতে শতাধিক কংগ্রেস কর্মী এক নাটকীয় প্রতিবাদে মিলিত হন। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেস সদস্যরা যেসব এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানকার মানুষ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি করছেন। কিন্তু কংগ্রেস সদস্যরা জনগণের সে কথায় কান দিচ্ছেন না। একটি খোলাচিঠি হিসেবে বিলি করা এই প্রতিবাদপত্রে একাধিক ইহুদি কর্মকর্তাও স্বাক্ষর করেছেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রায় ৭০ জন মুসলিম ও আরব কর্মকর্তাও মার্কিন নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘আমরা বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম এই বিশ্বাস থেকে যে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তা রক্ষা করা হবে।’ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কর্মকর্তা গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের দাবি তুলেছেন।