গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ ১০ নভেম্বর। আর এই দিনের রাজনৈতিক হিরো সাহসী যোদ্ধা শহীদ নূর হোসেন। গণতন্ত্র মুক্তি পাক-স্বৈরাচার নিপাত যাক বুকে-পিঠে ধারণ করে অমিত তেজ আর বুকভরা সাহস নিয়ে মিছিলে নেমে এক যুবক ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর বুকের রক্তে ঢাকার পিচঢালা কালো রাজপথ করেছিল রক্তে রঞ্জিত। সে আমাদের ’৫২ ’৬৯ ’৭১ এর সাহসী দেশপ্রেমিকদের গর্বিত উত্তরসূরি, আমাদের সংগ্রামী চেতনার আরেক নাম।
সেদিন স্বৈরশাসকের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছিল গণতন্ত্র রক্ষার এ সাহসী বীরকে। তার এ সাহসী আত্মত্যাগ আমাদের আন্দোলিত করে, চেতনা জাগ্রত করে প্রতিটি লড়াই-সংগ্রামে। শহীদ নূর হোসেন আজ একটি আন্দোলনের মাইলফলক। গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী নূর হোসেনের সাহসী আত্মদান আমরা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি।
১০ নভেম্বর এলেই রাজপথে যাদের ঠিকানা তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায় শহীদ নূর হোসেন, তারা বার বার ফিরে যায় ১৯৮৭ সালে। বিশেষ করে তৎকালীন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যারা জড়িত ছিল। মূলত ১৯৮১ সালে প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দেশে ফিরে আসার পর তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বৈরশাসকের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে। সেই লক্ষ্যে তার নেতৃত্বে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। স্বৈরাচারবিরোধী সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর— ১৫ দল, ৭ দল ও ৫ দলের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিল।
সেই কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ লাভ করেছিল। স্বৈরশাসকের সব বাধা উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মিছিল সমবেত হয়। তখন তোপখানা রোডের মুখে পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় যুবলীগ কর্মী নূর হোসেনের সাহসী মিছিল।