বিকাল ৪টা। গুলিস্তানের ফুটপাতে ছোটদের মোজা ও গেঞ্জি নিয়ে অলস বসে বিক্রেতা তারেক মাহমুদ। মুখে হাসি নেই।
কেনাবেচা কেমন চলছে- এই প্রশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘কাস্টমাররা হাঁটতে হাঁটতে দেখে, পছন্দ হইলে মোজা গেঞ্জি কেনে। তাই কাস্টমার ধরতে সারাদিন চিল্লান লাগে। এহন তো কাস্টমারই নাই। বেচুম কী।
“হরতাল অবরোধে বিক্রি ৯০ পারসেন্ট নাই হয়ে গেছে। আগের হরতালে দোকান সন্ধ্যায় লাগাইছি (খুলেছি)। আইজ (রোববার) বিকালে লাগাইলাম।”
কর্মদিবসের এমন বিকালে মতিঝিল আর গুলিস্তানের ফুটপাতে গম গম করে ক্রেতা-বিক্রেতায়। অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথের যাত্রী, আবার নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লার বাস বা সদরঘাটের যাত্রীরাও গুলিস্তান থেকে তুলনামূলক কম দামে পণ্য নিয়ে যেতেন। হকারদের ডাকাডাকি থাকত প্রতিটা মুহূর্ত।
কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা সেই স্বাভাবিকতায় ছেদ পড়েছে। গত সপ্তাহের পাঁচটি কর্মদিবসের মধ্যে চার দিনই গেছে হরতাল-অবরোধে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিনেও নেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কর্মসূচি থামবে না– এমন কথাও বাজারে শোনা যাচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে তাই দুশ্চিন্তা।
নিত্যদিনের কেনাবেচার আয়ে চলে সংসার। দুই চার দিন জমানো টাকায় চলা সম্ভব। কিন্তু বেশি দিন হলে কঠিন হয়ে যায় সবার জন্যই। যদি এভাবে হরতাল অবরোধ চলতে থাকে, তাহলে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে জীবন চলবে কী করে, সেই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে মনে।
কয়েকদিন পরই শুরু হবে শীতের কেনাকাটা। সারা বছরের আয়ের একটি বড় অংশ আসে এই সময়ে। এই সময়েই রাজনৈতিক অস্থিরতায় ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের মাঝে উদ্বেগ।
শুধু এই এলাকা নয়, নিউ মার্কেট, গাউসিয়া, নীলক্ষেত, এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ, ও বায়তুল মোকাররম এলাকার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের, ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ- সব বিক্রেতাদের শঙ্কাই একই রকম।