প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫-২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশন আয়োজিত প্রথম গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ ব্রাসেলস সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বস্তুত গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের প্রথম বৈঠকে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির জন্য একদিকে যেমন তাৎপর্যপূর্ণ, অন্যদিকে বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই আন্তর্জাতিক ফোরামে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জাপানের প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন।
ইইউ কর্তৃক গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। ইইউ এটিকে একটি কৌশল হিসাবে উপস্থাপন করেছে। এটি বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী একটি অভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। গ্লোবাল গেটওয়ে হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে যে ধরনের অবকাঠামো রয়েছে, যে ধরনের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ রয়েছে, পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে যে ধরনের সমস্যা আছে, সেগুলো মোকাবিলা করার একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। সেই উদ্যোগটি এসেছে ইইউ থেকে এবং এটিকে কৌশল বলা হচ্ছে এজন্য যে, এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলকে যুক্ত করা হবে। সেখানে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করে বিশ্বের যোগাযোগ, সাপ্লাই চেইন, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন, শিক্ষা ও গবেষণাকে উৎসাহিত করা হবে। গ্লোবাল গেটওয়ে ধারণার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, এটি টেকসই উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেবে, পাশাপাশি ইউরোপের যে মূল্যবোধ, তার ওপর আলোকপাত করবে।
ইইউর এ উদ্যোগটি আন্তর্জাতিক হলেও ইউরোপের একটি দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করেই এটি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এখানে ছয়টি কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে-বিশ্বকে সবুজ জ্বালানি ও গ্রিন হাইড্রোজেনে রূপান্তর করা, শিক্ষা ও গবেষণা, ক্রিটিক্যাল কাঁচামালের ওপর জোর দেওয়া, যোগাযোগ করিডর নির্মাণ, স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করা, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা এবং ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ করা। ইইউর এ উদ্যোগটি জি-সেভেনের ‘পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের’ সঙ্গেও যুক্ত এবং বলা যায়, এ দুটি উদ্যোগই প্রায় একই ধরনের উদ্দেশ্য নিয়ে গ্রহণ করা হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের গেটওয়েকে অনেক ব্যাপক পরিসরে বিবেচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে জি-সেভেন উদ্যোগটিতে মূলত অবকাঠামোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।