বয়স বাড়ার সঙ্গে শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ—দুটিই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শিশুর ওজন বৃদ্ধির দিকে যতটা নজর দেওয়া হয়, বিকাশের দিকটা শুরুতে অতটা আমলে নেওয়া হয় না। আর শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ যেহেতু খুব সুস্পষ্টভাবে চোখে পড়ে না, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাই এর ব্যত্যয়ও নজরে আসে না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বিকাশের হার বিভিন্ন শিশুর ক্ষেত্রে বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু এর ক্রম সব বাচ্চারই এক। যেমন কোনো শিশু ঘাড় শক্ত হওয়ার আগেই বসতে বা হাঁটতে শিখবে না।
বিকাশের ধাপগুলো দেরিতে শেখার মাধ্যমে শিশুর কিছু রোগ প্রকাশ পায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ পায়, যা শিখেছে, তা হঠাৎ করে অথবা আস্তে আস্তে ভুলে যাওয়ার মাধ্যমে। সাধারণত দেখা যায় জ্বর বা কোনো ইনফেকশনের পর এ রকম হচ্ছে। শিশু হয়তো আগে হাঁটতে পারত, কথা বলতে পারত, হাসত; এসব ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশু ঘাড়ও শক্ত করে ধরে রাখতে পারছে না, মায়ের দিকে তাকাচ্ছে না, কথাও ভুলে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের সমস্যাকে এখনো বাতাস লাগা, জিনের আসর বা খারাপ নজর লাগা মনে করে অনেক সময়ই এই শিশুদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় না। এ ধরনের রোগকে নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজিজ বা বাংলায় স্নায়ুর ক্ষয়জনিত রোগ বলা হয়ে থাকে। বড়দের ক্ষেত্রে এই ধরনের রোগের হার বেশি, তবে শিশুদেরও নেহাত কম হয় না।