বিমানের খাবার তৈরি করাটাও এক ব্যতিক্রমী শিল্প। বিশাল আকারের হট কিচেনে প্রাথমিকভাবে মাংসগুলো ৩০-৪০ শতাংশ গ্রিল করা হয়। পুরোটা রান্না করে রেখে দিলে ওড়ার পর যাত্রীদের কাছে খাবার পৌঁছাতে পৌঁছাতে তা ওভারকুক হয়ে যাবে। সবজির ক্ষেত্রেও তা–ই। রান্নার দায়িত্বে থাকা প্রধান রাঁধুনিদের মতে, সবজিজাতীয় খাবারের রং, স্বাদ ও মান নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ গরম পানিতে খুব কম সময়ের মধ্যেই রান্না করা হয়। প্রয়োজনে কিছু সবজিও ৫০-৬০ শতাংশ রান্না করা হয়। নুডলস, রাইস, স্যুপ, সস—এসব কয়েক ব্যাচ করে প্রায় পুরোপুরি রান্না করার পর মোটামুটি ঠান্ডা হওয়ার অপেক্ষা করা হয়। এরপর দমকা ঠান্ডা বাতাসে পুরো দমে ঠান্ডা করে হালকা হিমঘরে রাখা হয়।
খাদ্যনিরাপত্তার আরেক ধাপ প্রতিটি খাবারের ট্রেতে ট্র্যাকিং লেবেল। লেবেলিং করার আসল কারণ হলো অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কোনো যাত্রী খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ যেন ব্যাচ নাম্বার খোঁজ করে আসল কারণটা বের করতে পারে। এ ছাড়া কোন কার্টে কী খাবার এবং খাবারের গন্তব্য কী—ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের এসব জানতেও দরকার হয় লেবেলিং। ট্রেনিংপ্রাপ্ত ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের কাছে প্রতিটি ডিশ কীভাবে সাজানো থাকবে, তার একটা ছবি থাকে। সেভাবেই তারা খাবার সাজায়, পরে ফ্লাইটের ওভেনে গরম করে যাত্রীদের কাছে পরিবেশন করে। খাবার তৈরি, মেনু অনুযায়ী শর্করা, আমিষ, সবজি আর মিষ্টান্ন সাজানো, সবকিছু আবার হিমঘরে রাখা, সেখান থেকে ফ্লাইটে স্থানান্তর—এ যেন এক সুপারমার্কেটের ব্যস্ততা!