রোম যখন পুড়ছিল, সম্রাট নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন—এই প্রবাদের কথা কে না জানে। ৬৪ খ্রিষ্টাব্দে রোমে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ড ঘটে, ইতিহাসে যা ‘দ্য গ্রেট ফায়ার অব রোম’ হিসেবে পরিচিত। আর নিরো ছিলেন তখন রোমের সম্রাট। অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি ছিলেন ছুটিতে। রোমের বাইরে। সেই অগ্নিকাণ্ডে ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়।
সম্রাট নিরো ছিলেন সংগীতপ্রেমী। নিজেকে গায়ক হিসেবে ভাবতেও পছন্দ করতেন। মূল ইংরেজি প্রবাদে যদিও বেহালা বাজানোর কথা আছে, বাংলা ভাষায় সেই প্রবাদে বেহালার জায়গা নিয়েছে বাঁশি।
নিরোর মতো আমাদের আছে এমন সম্রাট। একজন নন, অসংখ্য। তাঁরা কতটা সংগীতপ্রেমী, তা নিশ্চিত না হলেও তাঁরা যে বিদেশ ভ্রমণপ্রেমী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ৫ অক্টোবর ১০ বছরের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে ডুবে যায় রাজশাহী। দেশের সবচেয়ে সুন্দর শহরের তকমা কুড়ানো রাজশাহীর বুকেও কফের মতো জমাট বেঁধেছিল অপ–উন্নয়ন মানে অপরিকল্পিত নগরায়ণ।
এক দিনের বৃষ্টিতেই সেই কফ উগরে পড়ে। আর এমন পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশনটির ৪০ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৬ জন একসঙ্গে ভারত সফরে। নিয়মে থাকলেও এই ভ্রমণের জন্য কাউন্সিলররা সিটি করপোরেশন বা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অনুমতি নেননি। ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগে যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা, তখন আমাদের সম্রাট নিরোরা আমোদভ্রমণে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, নির্বাচিত নতুন মেয়র দায়িত্ব নেননি বলে সিটি করপোরেশনের সার্বিক কার্যক্রমের দায়িত্বে আছেন একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনিও জানেন না এ সফরের বিষয়ে। সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী মেয়র ও কাউন্সিলররা এখনো দায়িত্ব নেননি। ১১ অক্টোবর তাঁদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।