বেসরকারি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মনজিলা ইয়াসমিন। তিনি জানালেন তার মানসিক চাপের কথা। স্বামী-স্ত্রী দুজনে চাকরিজীবী। ১৮ মাসের শিশুকে প্রায়ই কর্মক্ষেত্রে নিয়ে যান মনজিলা। তবে তার কর্মস্থলে নেই কোনও ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার কিংবা ডে কেয়ার সেন্টার। ফলে বাচ্চা নিয়ে গেলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় তাকে। যেদিন অল্প ক্লাস থাকে— সেদিন বাচ্চাকে ঘরের ছোট গৃহকর্মীর কাছেই রেখে আসেন। অনেকক্ষণ বাইরে থাকতে হলে সঙ্গে নিয়ে যান সন্তানকে। কাজের ফাঁকে বাচ্চাকে নিরাপদে কোথাও কিছুক্ষণের জন্য রাখা কিংবা ব্রেস্ট ফিডিং করানো নিয়ে লজ্জায় পড়েন তিনি। বাচ্চাকে কোলে নিয়েই অনেক সময় ক্লাস করান। কখনও আবার বাচ্চাকে অন্য সহকর্মীদের কোলে রেখে খুব জরুরি কাজগুলো সেরে নিতে হয় তাকে।
মনজিলা বলেন, ‘স্কুলে বসে কিছুটা আড়ালে বাচ্চাকে ব্রেস্ট ফিডিংয়ের সময় মনে হয়— এই বোধহয় কেউ হুট করে রুমে ঢুকে পড়লো, বা কেউ হয়তো দূর থেকে তাকিয়ে আছে এদিকে। ফলে ওই সময়টা আমি অন্যান্য কাজের তুলনায় বেশি মানসিক তাড়না অনুভব করি।’
সামিয়া রহমান নামের আরেক মা তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানালেন, ‘গত সপ্তাহের ঘটনা। বাসা থেকে কাছেই একটি বহুতল মার্কেটে গিয়েছিলাম। বাচ্চাটা সঙ্গেই ছিল। প্রয়োজনীয় কিছু কেনাকাটার পর বাচ্চা কান্না শুরু করলো। কিন্তু ব্রেস্ট ফিডিং করানোর মতো কোনও জায়গা মার্কেটে খুঁজে পেলাম না। পুরো মার্কেটজুড়ে মানুষ। বাচ্চার কান্নাও থামছে না। এসির মধ্যে ঘামতে শুরু করলাম। বাচ্চার বাবাকে নিয়ে একটু আড়াল খোঁজার চেষ্টা করলাম। মার্কেটের কর্নারে কয়েকটা দোকান বন্ধ থাকায় আলো নেভানো ছিল। ওখানে কিছুটা অন্ধকারে বাচ্চার বাবা আমাকে আড়াল দিয়ে দাঁড়ালো। আমি কোনোরকম দাঁড়িয়ে থেকেই বাচ্চাকে ব্রেস্ট ফিডিং করালাম। আজ যদি সেখানে একটি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার বা ডে কেয়ার সেন্টার থাকতো, তাহলে কি এতটা হয়রান হতে হতো? সেদিনের মানসিক কষ্ট কখনো ভুলে যাওয়ার না।’