এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ইরানের জেলবন্দী মানবাধিকারকর্মী নারগিস মোহাম্মদি। নারগিস ইরানে খুবই পরিচিত নাম। সারা বিশ্বেই হালে তিনি বেশি করে প্রচার পেয়েছেন। ইরানের এই নারী বহু বছর ধরে মানবাধিকার নিয়ে লড়াই করে চলেছেন। এ জন্য তিনি সীমাহীন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
তিনি আরাম-আয়েশ, শান্তির জীবন বিসর্জন দিয়ে বেছে নিয়েছিলেন এক প্রতিবাদী জীবন। ধর্মের নামে নারীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া জবরদস্তিমূলক বিধিবিধানের বিরুদ্ধে তিনি সরব হয়েছেন। আর তাতেই তিনি ক্ষমতাসীন মৌলবাদী চক্রের রোষানলে পড়েছেন বারবার।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অদম্য প্রাণশক্তির অধিকারী এক ব্যক্তিত্ব। ইমাম খোমেনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন নারগিস। সেখানে তিনি পদার্থবিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজে পড়াকালেই তিনি সমতা এবং নারীর অধিকারের পক্ষে একজন বলিষ্ঠ কর্মী হয়ে ওঠেন। পড়াশোনা শেষ করার পরে তিনি প্রকৌশলী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার ব্যাপারে আত্মনিয়োগ করেন। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়ে প্রকৌশলী হিসেবেই কর্মজীবন শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সংস্কার-মনোভাবাপন্ন সংবাদপত্রের জন্য কলামও লিখেছিলেন।
২০০৩ সালে তিনি তেহরানের ডিফেন্ডারস অব হিউম্যান রাইটস সেন্টারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এটি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী শিরিন এবাদির প্রতিষ্ঠা করা একটি সংস্থা। ২০১১ সালে নারগিসকে প্রথমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সময়ে কারাবন্দী মানবাধিকারকর্মী ও তাঁদের পরিবারকে সহায়তা করার প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে বহু বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
২০১৩ সালে জামিন পাওয়ার পর নারগিস মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। ২০১৫ সালে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাগারে থাকাকালে তিনি রাজনৈতিক বন্দীদের, বিশেষ করে নারীর বিরুদ্ধে সরকারের পদ্ধতিগত নির্যাতন এবং যৌন হেনস্তার বিরোধিতা করেন।