কোনো ভয়ানক পরিস্থিতিতে পড়ে অকালে প্রাণ হারানোর শঙ্কা তো থাকেই। কিন্তু বিছানা থেকে পড়ে প্রাণ হারানোর কথা হয়তো মানুষ দুঃস্বপ্নেও ভাবে না। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ বিছানা থেকে পড়ে মারা যায়। এর মধ্যে অবশ্য শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (সিডিসি) হিসাবে, সে দেশে প্রতিবছর বিছানা থেকে পড়ে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে যেতে হয় ১৮ মানুষকে। আর ৪ লাখের বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। তাঁদের সবার বয়স অবশ্য ৬৫ বছরের বেশি। এ ছাড়া ইউরোপে শুধু যুক্তরাজ্যেই প্রতিবছর ২০ হাজার মানুষ বিছানা থেকে পড়ে আহত হয়।
এসব দুর্ঘটনায় কতজন মারা যায়, সেই পরিসংখ্যান অবশ্য পাওয়া মুশকিল। কারণ, বিছানা থেকে পড়ে পাওয়া আঘাতের প্রভাব থাকে দীর্ঘমেয়াদি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর বিছানা থেকে পড়ে সাড়ে ৪০০-এর বেশি মানুষ মারা যায় বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যান দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুসারে, অন্যান্য কারণে মৃত্যুর সংখ্যা এ তুলনায় অনেক কম হলেও তা একবারে নগণ্য নয়। বিছানা থেকে পড়ে হাড়ভাঙা, মাথায় আঘাত এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণসহ গুরুতর আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর পরিণতি দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে।
বিছানা থেকে পড়ে মৃত্যুর প্রধান কারণ মাথায় আঘাত পাওয়া। এ ছাড়া খাটের কিনারায় পড়ে গেলে গলায় চাপ লেগে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া বয়স্কদের মধ্যে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারালে সাধারণত সময়মতো চিকিৎসা পান না। এতেও মৃত্যু প্রায় অবধারিত থাকে।
কেন মানুষ বিছানা থেকে পড়ে যায়?
বিছানা থেকে পড়ে যাওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:
১. বয়স: বিছানা থেকে পড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। ভারসাম্যহীনতা বা শারীরিক অসুস্থতার করণে এমনটা হয়ে থাকে।
২. ঘুমের সমস্যা: অনেকে ঘুমের মধ্যে হাঁটাচলা করেন। আবার কারও রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা পায়ের পেশিতে টান পড়ার সমস্যা হয়। তখন ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করতে তাঁরা পড়েন যান।
৩. মদ্যপান বা মাদক সেবন: নেশাগ্রস্ত থাকলে শরীরের ভারসাম্য থাকে না। তখন বিছানা থেকে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৪. খাটে রেলিং না থাকা: খাটে রেলিংয়ের মতো নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।