ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব দেশে দিনদিন বেড়েই চলেছে। বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার। বিশেষজ্ঞরা বলেই চলেছেন মশা দমনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির কার্যকর প্রয়োগের কথা।
সেই সূত্র ধরেই বলছি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগের শুরুতে যা নির্ধারণ করা প্রয়োজন তার কথা। এডিস মশার জীবনচক্র চারটি ধাপে সম্পন্ন হয়। তা হলো-ডিম, লার্ভা, পিউপা ও এডাল্ট। এ চারটি ধাপের তিনটি ধাপই অতিক্রান্ত হয় পানিতে। আর পানিতে অতিক্রান্ত তিনটি ধাপের সবচেয়ে দুর্বল ধাপ হলো লার্ভা। এই লার্ভা আবার চারটি ধাপে সম্পন্ন হয়। ১ম ইন্সটার, ২য় ইন্সটার, ৩য় ইন্সটার ও চূড়ান্ত ইন্সটার। এ চার ধাপের লার্ভার মধ্যে আবার ১ম ইন্সটার সবচেয়ে বেশি দুর্বল ধাপ। ডিম ফোটার পর এ ধাপটি ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তারপর খোলস পরিবর্তন (মন্টিং) করে ২য় পর্যায় বা ইন্সটারে পৌঁছে। এভাবে চারটি পর্যায় পার করে পিউপাতে পরিণত হতে ৬-৭ দিন সময় লাগে।
এ লার্ভার পর্যায়ে এরা অত্যন্ত সংবেদনশীল থাকে। জলাধারে পানিতে সামান্য ঢেউও এরা অনুভব করতে পারে, এমনকি পানির উপরিভাগ দিয়ে কোনো ছায়া অতিক্রম করলেও এরা সংবেদনশীল হয়ে জলাধারের তলদেশে অবস্থান নেয়। তাই লার্ভি সাইড প্রয়োগের সময় অবশ্যই এ বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি। আর সে জন্যই প্রজনন স্থল বা জলাধারের পরিমিতি (আকার) সম্পর্কে স্বচ্ছ জ্ঞান পরিকল্পনা প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। বিভিন্ন ধরনের ওয়েট কনটেইনারের পরিমাপ ও অবস্থান তাদের মশা উৎপাদনশীলতার হারকে প্রভাবিত করে। আর তাই এ উৎপাদনশীলতার সক্ষমতার ওপর নির্ভর করেই লার্ভা নিধন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ যেসব ফ্যাক্টর জলাধার বা পানি ধারণ পাত্রে মশক উৎপাদনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে, সেসব ফ্যাক্টর অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।