ডেঙ্গু ভাইরাসের জীবাণুবাহী এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। মশা নিধনে শত কোটি টাকা খরচ করা হলেও ফলাফল খুবই হতাশাজনক। এ নিয়ে কোনো কৈফিয়তও নেই কারও। রাজধানীর দুই কোটির বেশি মানুষ এডিস মশার কাছে জিম্মি। প্রতিদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মৃত্যু ও আক্রান্তের যে পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, তা সবার মাঝে ভয় জাগিয়ে দিচ্ছে। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিদিনের ডেঙ্গুর বুলেটিনে প্রকৃত তথ্য উঠে আসে না।
মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন বাস্তবে কী করছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র দেখা যেতে পারে। এডিসের লার্ভা নিধনে ড্রেনে গাপ্পি মাছ ছাড়া, জলাশয়ে নোভালোরুন ট্যাবলেট প্রয়োগ, জলাশয়ে হাঁস ও ডোবায় ব্যাঙ ছাড়া হয়। ড্রোন দিয়ে মশার উৎসস্থলও চিহ্নিত করা হয়। উড়ন্ত মশা মারতে ফগিং ও মশার লার্ভা নিধনে লার্ভি সাইডিং (স্প্রে) করা হচ্ছে। এ ছাড়া কারও বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হচ্ছে। এভাবে আট ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হয় ডেঙ্গু নিধনে। কিন্তু তা বৈজ্ঞানিক উপায়ে না হওয়ায় এসব উদ্যোগেও মশা নিধন সম্ভব হচ্ছে না। অথচ, এর পেছনে বরাদ্দ থাকে বেশ ভালো পরিমাণ। চলতি অর্থবছরে শুধু মশা নিয়ন্ত্রণেই ১৬৮ কোটি টাকা বাজেট রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্য ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ এবং উত্তরের জন্য ১২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এদিকে, উপরোক্ত আট উদ্যোগের বাইরেও সর্বশেষ উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সিঙ্গাপুর থেকে আধুনিক প্রযুক্তির কীটনাশক ‘বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস’ (বিটিআই) আমদানি করে। বিটিআই নিয়েও বিতর্ক থাকায় সেটির প্রয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এভাবে সব রকমের পদ্ধতি অনুসরণ করে মশা নিধনে অপরিকল্পিত চেষ্টা করায় দিন শেষে কার্যকর কোনো ফলাফল আসছে না। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় মশা নিধনের এমন হতাশাজনক চিত্রই পাওয়া গেছে।