চলতি ২০২৩ পঞ্জিকাবর্ষের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ধারা বজায় রেখে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেও ইউরোপের বৃহত্তম ক্রেতাদেশ জার্মানিতে পোশাক রফতানি কমেছে ৬ শতাংশের বেশি। মূল্যস্ফীতির কারণে এ দুই দেশসহ পশ্চিমের প্রধান রফতানি বাজারগুলো নিয়ে আগে থেকেই উদ্বেগে ছিলেন রফতানিকারক ব্যবসায়ীরা। তাদের এ স্নায়ুচাপকে আরো বাড়িয়ে তুলছে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সরকারের মুখোমুখি অবস্থান। মার্কিন ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু হওয়াসহ সাম্প্রতিক ঘটনাবলি পশ্চিমা বিশ্বের প্রধান বাজারগুলোর সঙ্গে ব্যবসা ধরে রাখা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে তাদের।
রফতানির পাশাপাশি প্রধান বাজারগুলো থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রবাহও এখন কমতির দিকে। এর মধ্যেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্তে শুক্রবার থেকে ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে তোলা প্রস্তাব পাস হয়েছে ১৩ সেপ্টেম্বর। নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ দিনে দিনে আরো দৃশ্যমান হচ্ছে।
পশ্চিমাদের সঙ্গে সরকারের এ মুখোমুখি অবস্থান দেশের ব্যবসায়ীদের উদ্বেগকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষ করে প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক এখন সবচেয়ে বেশি। তাদের রফতানীকৃত পণ্যের বৃহৎ গন্তব্যের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি ছাড়া যুক্তরাজ্য ও কানাডার নামও রয়েছে। বরাবরই এসব দেশকে তালিকার সবচেয়ে প্রভাবশালী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পররাষ্ট্রনীতি নিতে দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের অংশীদার অর্ধ ডজন ব্যবসায়ী বণিক বার্তাকে বলেছেন, মার্কিন ভিসা নীতি কার্যকরের ঘোষণায় তারা আতঙ্কিত। কে কখন ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে, সেটি নিয়ে তারা উদ্বেগের মধ্যে আছেন। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলোর ক্রয়াদেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি পশ্চিমা অন্য দেশগুলো যদি এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বিরোধ বেড়ে মার্কিন বিধিনিষেধের ক্ষেত্র ও আওতাও যদি আরো বাড়ে, তাহলে তা আরো বড় বিপত্তির কারণ হয়ে দেখা দেবে।