ধর্মীয় ‘সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু’ রেখা টানার খেলাটা এবার একটু বেশি আগে শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনে বা সময়ে-অসময়ে রাজনীতির এ অপখেলা বিভিন্ন সময়ে দেশে নানা সর্বনাশ ডেকে আনলেও তা বন্ধের উদ্যোগের কোনো নমুনা নেই। মাঝেমধ্যে স্থগিত রাখা হয় মাত্র। আবার সময় মতো এ তাস ফেলা হয় শুধুই নিজস্ব লাভ নিশ্চিতের মতলবে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ থেকে এবার বার্তা এসেছে কড়া ভাষায়। সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কী দেবেন, কী নেবেন তা ভোটের আগেই পরিষ্কার করতে। ‘১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, তবু দেশ কেন সাম্প্রদায়িক’ এ প্রশ্নও ছোড়া হয়েছে।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সংখ্যালঘুদের এ ধরনের প্রশ্নের তীর ছোড়া আচানক বা আজগুবি নয়। একদম আকস্মিকও নয়। এর নেপথ্যে লুকানো রয়েছে নানা ঘটনা। রাজনীতি বা ভোটের অঙ্ক মেলাতে চিকন বুদ্ধিতে সংখ্যালঘুদের ব্যবহারের কাজে আওয়ামী লীগ বরাবরই অপ্রতিদ্বন্দ্বী। একতরফা বেনিফিশিয়ারিও। বছর কয়েক ধরে হেফাজতসহ দক্ষিণপন্থি বা ইসলামি নামধারী সংগঠনগুলোর বেশিরভাগও তাদের কব্জায়। সপ্তাহখানেক আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মারাত্মক মন্তব্য করেছেন। যার মধ্যে গুরুতর তথ্যের খোঁজ পেয়েছেন রাজনীতি সচেতনরা। অ্যাডভোকেট রানাদাশ গুপ্ত ও ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যরাও বেশি সময় না নিয়ে মুখ খুলে বসেছেন।
‘সময়টা খারাপ। এবার আমি ভয় পাচ্ছি যে অশুভ শক্তি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এমন কোনো ঘটনা যদি ঘটায়, যেটা হিন্দুদের সঙ্গে এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ফাটল ধরাতে পারে। রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী, দুর্বৃত্তরা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। কাজেই এবার বেশি করে সতর্ক থাকতে হবে।’ এই ছিল ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য। এমন মন্তব্যে তিনি কাকে কী বার্তা দিলেন? না-কি প্রশ্ন আউটের মতো সামনে বাংলাদেশ-ভারত দুদেশের নির্বাচন, ধর্ম নিয়ে গরম রাজনীতির মৌসুম আসছে সেই সতর্কতা দিলেন? ঠাকুর ঘরে কে, আমি কলা খাই না প্রবাদও আলোচিত ভেতরে-ভেতরে।