উইকিপিডিয়া থেকেই জানা যায়, বিশ্ব ইতিহাসে যে কয়টা বিপ্লব জনগণের মনে, জনসমাজে আর শিল্প-সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব রেখেছে, তার সূতিকাগার ফরাসি বিপ্লব। ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯-১৭৯৯) হলো ইউরোপ এবং পশ্চিমাসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
এই বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে গিয়ে প্রজাতান্ত্রিক আদর্শের অগ্রযাত্রা শুরু হয় এবং এরই সঙ্গে দেশটির রোমান ক্যাথলিক চার্চ নিজেদের সব গোঁড়ামি ত্যাগ করে নিজেকে পুনর্গঠন করতে বাধ্য হয়। এই বিপ্লবকে পশ্চিমা গণতন্ত্রের ইতিহাসের একটি জটিল সন্ধিক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যার মাধ্যমে পশ্চিমাসভ্যতা নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র ও অভিজাততন্ত্র থেকে নাগরিকত্বের যুগে পদার্পণ করে।
ঐতিহাসিকেরা এই বিপ্লবকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করেন।ফরাসি বিপ্লবের মূলনীতি ছিল ‘স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী’। এই স্লোগান বিপ্লবের চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিল, যার মাধ্যমে সামরিক ও অহিংস উভয়বিধ পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে গোটা পশ্চিমা বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এ স্লোগানটি তখন সব কর্মীর প্রাণের কথায় পরিণত হয়েছিল।
ফরাসি বিপ্লবের সঙ্গেই বদলে যায় ইতিহাস। সংস্কৃতিও নতুন রক্তধারায় জেগে ওঠে। যাদের আমরা প্রান্তিক বা গরিব বলে মনে করি, সেই সব শ্রেণির মানুষ এর আগে সাহিত্যে প্রধান চরিত্র হতে পারে, তা কেউ ভাবেনি। ভিক্তর হুগো ‘লা মিজারেবল’-এ সে ধারণা চুরমার করে দেন। আমি কোনো সাহিত্যের লেখা লিখছি না। শুধু বলছি, সেই ইতিহাসের উজ্জ্বলতম দেশের প্রেসিডেন্ট ঘুরে গেলেন বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগবিরোধী কারও চোখে এর গুরুত্ব ধরা পড়ল না। কারণ ফরাসি বিপ্লব হোক আর যা-ই হোক, তাঁরা অন্ধ থাকবেন—এটাই তাঁদের সিদ্ধান্ত।
১৯৮৭ সালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা কলকাতা গিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়কে তাঁদের দেশের সেরা সম্মান ‘লিজিয়ন অব অনার’ প্রদান করতে। ৩৬ বছর পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁ এলেন ঢাকায়। গেলেন জলের গানের রাহুল আনন্দের ডেরায়। ডেরাই বটে। ওইটুকু বাড়িতে এক কাপ রং চা খাওয়ার পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র পরখ করা, সুর ও গান শোনা সবই করেছেন তিনি।