চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৯২ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭ জনকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ২০২৩-এর প্রথম সাত মাসের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এই খবর খুব উদ্বেগজনক। কিন্তু আমরা কি এত শিশুহত্যার ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছি, নাকি শিশু নির্যাতনের সংবাদে আমরা এমনই অভ্যস্ত যে এই প্রতিবেদন আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি?
শিশুরা ভয়ংকর নির্মমতার শিকার হলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। কিন্তু প্রতিদিন অসংখ্য শিশু ঘরে এবং বাইরে নানা ধরনের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করছে। নির্যাতন শিশু অধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন, যা তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ১৬.২ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশু নির্যাতন, শোষণ, অপহরণের অবসান হওয়ার কথা। ‘এসডিজি ১৬ নাউ’ ক্যাম্পেইনের প্রতিবেদন ‘হাফ ওয়ে টু ২০৩০: রিপোর্ট অন এসডিজি ১৬+’ (জুলাই, ২০২৩) অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশে শিশু নির্যাতন অবসানের কাজ খুবই ধীরগতিতে চলছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এই প্রতিবেদন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, নানা দেশের সরকার এবং শতাধিক সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধির বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিধিনিষেধ এবং স্কুল বন্ধ থাকায় বিশ্বে অতিরিক্ত সাড়ে আট কোটি শিশু নির্যাতনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। গার্হস্থ্য সহিংসতা বেড়ে গেছে; মেয়েশিশুরা আগের চেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।