সাভারে স্কুলছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টা এবং একটি ভবনের পঞ্চম তলা থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম মেহনাজ মিশু। গণমাধ্যমে গত ১৯ আগস্ট ‘নগ্নছবি ধারণ করে যুব মহিলা লীগের নেত্রী গ্রেপ্তার’ এই শিরোনামে খবরটি ছাপা হয়। পরদিন দুপুরে সাভার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন শাহনাজ গার্ডেন এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা মেহনাজ মিশু ও তার কথিত স্বামী আতিকুর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মামলা করেছেন।
মেহনাজ মিশু ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক। তবে তিনি নিজেকে ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এজাহার ও ভুক্তভোগীর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে ২৪ মে কৌশলে ওই ছাত্রীকে তার বাসায় নিয়ে যান মেহনাজ। পরে গভীর রাতে ছাত্রীকে ছবি তুলতে দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন। এ সময় তার কথিত স্বামী আতিক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে তাকে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়। পরে বাড়ির পঞ্চম তলার বেলকনি থেকে নিচে ফেলে দেন মিশু ও আতিক।
স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্ত মিশু এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ছাত্রীকে হুমকি দেন। এ ছাড়া ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল বলে সবাইকে জানাতে বলেন। ১৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হলে ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাকে বাসায় নিয়ে যান।
ওই ছাত্রীর মামা জানান, তার ভাগ্নি সাভারের একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। মা-বাবার বিচ্ছেদের পর সে তার ফুফুর সঙ্গে সাভারে মিশুদের বাসায় ভাড়া থাকত। ফুফু গ্রামে ও ফুফাতো বোন চাকরির সুবাদে অন্যত্র চলে যান। তখন একাই ওই বাসায় থাকত ওই ছাত্রী। সেই সুযোগ তাকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করানোর চেষ্টা করেন মিশু। ২৪ জুলাই রাতে দফায় দফায় মারধর করেন তাকে। এ তথ্য পুলিশকে জানিয়ে দেবে বললে ওই ছাত্রীকে পঞ্চম তলা থেকে ফেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়। যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ডেইজি সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘মেহনাজ মিশুর বিরুদ্ধে আগেও কিছু অভিযোগ এসেছে। আমার সই নকল করে ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিতেন বলেও জেনেছি।’ সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, মেহনাজ মিশুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।