এডিস মশা নিধন প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, মশা মারার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের একার না। জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই কাজ করা হয়। মন্ত্রী মশাই ভালোই বলেছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় বা সিটি করপোরেশন মশা মারার বাজেট নেয় কেন? বা খরচ নেয় কেন? জনগণ তো কোনো পয়সা নেয় না। ডেঙ্গু মশার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর সিটি করপোরেশন নানা উদ্যোগের কথা বলেছে। বাস্তবায়ন করতে বড় বাজেট তৈরি করেছে। কিন্তু জনগণ কী করেছে? তাদের হাতে যা ছিল তা নিয়ে মশা মোকাবিলার চেষ্টা করছে। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডেঙ্গু মশা ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি ঘরে মশা তাড়াতে কয়েল, স্প্রে বা লোশন ব্যবহার হচ্ছে। এতে জনগণ কি কোনো বাজেট নিচ্ছে? নিজের রোজগারের পয়সায় মশা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে যাচ্ছে তাদের খরচের হিসাবটা দেখুন? মন্ত্রী মশাই এ টাকার হিসাব করবেন না যে মশা তাড়াতে শহরের একজন মানুষের খরচ কতটা বেড়েছে? আপনারা বাজেট করে বসে আছেন প্রকৃতির ওপর ভরসা করে। বৃষ্টি কমে গেলে মশা কমে যাবে। বড় জোর আর মাসখানেক। অক্টোবর থেকে মশা আপনাআপনি কমে যাবে, এ আশায় তারা আছেন। সিজন শেষে আক্রান্তের হার এমনিতেই কমে যাবে সেখানে সরকারের মন্ত্রণালয় বা সিটি করপোরেশনের কোনো কৃতিত্ব নেই। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারতে ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তারা কিন্তু প্রাকৃতিক নিরোধের ওপর ভরসা করেনি। তারা নানাভাবে চেষ্টা করেছে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য।
মশা নিধনের ফগার মেশিন চালানোর দক্ষতা অর্জনের জন্য গত আগস্টে চারজন সরকারি কর্মকর্তা ও একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জার্মানি সফর করেছেন। তারা সেখানে থার্মাল ফগার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান পালসফগে প্রশিক্ষণ নেন। যদিও এই কর্মকর্তারা এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মশানিধন প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত নন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সম্প্রতি ১০০টি ফগার মেশিন কিনেছিল। এসব মেশিন চালাতে এবং ফগার মেশিন পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এ সফরের উদ্দেশ্য। কিন্তু জরুরি ছিল ডেঙ্গু নিধনে কীটতত্ত্ববিদদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। কিংবা তাদের গবেষণার জন্য সুযোগ তৈরি করা, যা আমাদের দেশে এখনো হয়নি। আর গবেষণা ছাড়া বছর বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা একেবারেই সম্ভব না। যে কথা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার শুরু থেকে বলা হচ্ছে।