প্রযুক্তির নাম ‘পরিবেশবান্ধব’। এটি ব্যবহার করে ১৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ‘নিরাপদ সবজি’ উৎপাদন বেড়েছিল বলে দাবি করা হয়। রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলার সাবেক একজন কৃষি কর্মকর্তা এ কাজে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৬’ পেয়েছেন। তবে খোঁজ নিতে গিয়ে দুই উপজেলার কোথাও সেই প্রযুক্তির ব্যবহার দেখা যায়নি। দেখা পাওয়া যায়নি নিরাপদ সবজিরও।
ওই কৃষি কর্মকর্তার নাম মো. শফিকুল ইসলাম। তাঁর দাবি, তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা থাকতে তিনি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৪২১ বঙ্গাব্দের চেয়ে ১৪২৫ বঙ্গাব্দে প্রায় দ্বিগুণ সবজি উৎপাদন করেন। আর্থিকভাবে বৃদ্ধির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। একইভাবে গোদাগাড়ী উপজেলার দায়িত্বে থাকতে সেখানে আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৭১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ১৪২৫ ও ১৪২৬ বঙ্গাব্দের ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ প্রদান উপলক্ষে যে পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ২০২০ সালে গোদাগাড়ী উপজেলার দায়িত্বে থাকতে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে কালীদিঘি গ্রামকে ‘নিরাপদ সবজির গ্রাম’ ঘোষণা করেছিলেন। এ মর্মে গ্রামের মোড়ে একটি সাইনবোর্ড টানানো হয়েছিল। সেই বছরের মার্চে ওই গ্রামে গিয়ে চাষিদের বাড়ির আনাচকানাচে ছোট ছোট সবজির বাগান দেখা যায়। সেই বছরের ১৮ মার্চ ‘নিরাপদ সবজি গ্রাম কালীদিঘি’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল।
কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম তখন বলেছিলেন, মুজিব বর্ষে ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা থেকেই কৃষকদের বাড়ির আনাচকানাচে নিরাপদ সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। এতে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। পোকা দমনে শুধু জৈব বালাইনাশক, সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ও হলুদ স্টিকি ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া কৃষকদের কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আড়াই থেকে তিন মাসে এ উদ্যোগ অনেকটা সফল হয়েছে।