টেকসই উন্নয়নের জন্য উন্নয়নশীল পরিকল্পনার প্রভাবক ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিন্তা থেকে যেমন কাজের উৎপত্তি, বৃক্ষের পরিচয় যেমন তার ফলে, তেমনি পরিকল্পনার উদ্দেশ্য বিধেয়র মধ্যে অর্থবহ উন্নয়নে সদিচ্ছার সংশ্লেষ থাকলেই বলা যাবে সেই উন্নয়নে সুফল মিলবেই। সে নিরীখে, একটি জাতির দূরদর্শী পরিকল্পনায় ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা থাকলে, উপযুক্ত উপাদানের অভাবহেতু সেখানে যদি কোনো বিচ্যুতি ঘটে তাহলে উন্নয়ন ভিন্নমুখী হয়ে যেতে পারে।
এখানে আমি তদানীন্তন পাকিস্তান আমলের একটি উদ্যোগ পরিকল্পনার কথা প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে পারি “ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে শিক্ষা আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন বেশ জোরেসোরে শুরু হলে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের উপদেষ্টারা (পাকিস্তানের সামরিক, বেসামরিক ও সামন্তবাদী রাজনৈতিক আমলারা) একদিন তাকে বললেন, ‘স্যার আমরা একটা ভালো বুদ্ধি বের করেছি।’
আইয়ুব খান জানতে চাইলেন কী বুদ্ধি? তারা বললেন যে পূর্ব পাকিস্তানের লোকেরা সংখ্যাগুরু হয়ে সংখ্যালঘু আমাদের কাছে সবকিছুতে ভাগ চায়, রাষ্ট্র ভাষার দাবি তোলে, রাজধানী চায়, আরও কত কিছু। সেখানকার সমাজব্যবস্থায় আন্তঃআয়বৈষম্য আমাদের মতো নয়, সেখানকার মধ্যবিত্তরা সৃজনশীল, সক্রিয়, সচেতন; সেখানকার সমাজে বুদ্ধিজীবীরা মোটামুটি একাট্টা, মেধাবী ছাত্ররাই নেতৃত্বে। এটাকে মোকাবিলার জন্য আমরা একটা দূরদর্শী পরিকল্পনার কথা ভেবেছি। আইয়ুব খান বললেন সেটা কী? তারা বললেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা’।