সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এক লাখ ৪ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এখনো আনুমানিক সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার মতো বকেয়া আছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিক্রির বিল বাবদ সরকারের কাছে তাদের পাওনা ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যেই ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এই সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকাও আছে। চুক্তি অনুযায়ী পুরো অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা মার্কিন ডলারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শুধু অপরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ক্ষমতা বাড়ানোর কারণে দিতে হয়েছে এই অর্থ। উৎপাদন না করলেও তাদের এই টাকা বসিয়ে বসিয়ে পরিশোধ করতে হয়েছে। তাদের মতে, ক্যাপাসিটি চার্জে ডুবতে বসেছে বিদ্যুৎ খাত।
বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার দ্বিগুণেরও বেশি। আর এই অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতাই এখন সরকারের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। উদ্বৃত্ত উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে স্বস্তিতে নেই বিদ্যুৎ বিভাগও। বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে সরকারকে। দলীয় ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। তারা বলছেন, বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য এটা বড় বোঝা। বিদ্যুৎ বিভাগের দূরদর্শী পরিকল্পনার অভাবে সরকারি কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে।
চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ক্ষমতা সামান্য পরিমাণ বেশি থাকতেই পারে। কিন্তু তা দ্বিগুণ করে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অলস বসিয়ে রাখার কোনো যুক্তি নেই। হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অলস বসে থাকার কারণে অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।